শিরক থেকে বাঁচার উপায় কি?
১. ই’লম বা দ্বীনি জ্ঞান অর্জনঃ
এই কাজটা প্রত্যেক মুসলমান নর ও নারীর উপর ফরয। আল্লাহর আসমা ও সিফাত, এইগুলোর সঠিক অর্থ ও ব্যখ্যা, তাওহীদ কি ও তাওহীদ কতপ্রকার, শিরক কি, শিরক কত প্রকার, কোন কাজগুলো শিরক, এইগুলো কেনো শিরক, কুরআন ও সহীহ হাদীসের উপর ভিত্তি করে দলীল কি – এসম্পর্কে বিস্তারিত জানা থাকলে আপনি শিরককে চিনতে পারবেন ও এইগুলো থেকে বেঁচে থাকতে পারবেন ইন শা’ আল্লাহ। বিশেষ করে আকীদাহ সম্পর্কে ভালো পড়াশোনা থাকা প্রত্যেকটা মুসলমানের জন্য জরুরী। নিচের এই তিনটা বই সংগ্রহ করে অবশ্যই পড়বেন ও আলেমদের কাছ থেকে এইগুলো ব্যখ্যা জেনে নেবেন।
#ঈমান_আকীদাঃ
তাওহীদ, শিরকসহ ঈমানের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানার জন্য অবশ্যই এই বইগুলো বারবার পড়বেন।
ক. বইয়ের নামঃ “আকীদাহ আত-তাহাবীয়া”
এই বইটাতে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের আকীদাহ সংক্ষেপে বলা হয়েছে। ইসলামী আকীদাহ সম্পর্কে জানার জন্য খুব সুন্দর ছোট একটি বই।
আহসান পাবলিকেশান। দাম – ১৫ টাকা
খ. বইয়ের নামঃ “কিতাব আত-তাওহীদের ব্যাখ্যা”
মূল - শায়খুল ইসলাম মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওহহাব (রহঃ)
ব্যখ্যাঃ শায়খ সালিহ বিন আব্দুল আজীজ ও শায়খ মুহাম্মাদ বিন ইব্রাহীম (রহঃ), তাওহীদ পাবলিকেশান/দারুস সালাম পাবলিকেশান, দাম – ১৫০টাকা।
এই বইটা পড়ে সবচাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাওহীদ ও শিরক সম্পর্কে জানতে পারবেন।
গ. বইয়ের নামঃ “সহীহ আকীদার মানদন্ডে তাবলিগী নিসাব”
মুরাদ বিন আমজাদ, তাওহীদ পাবলিকেশান। দাম – ১৫০ টাকা।
প্রচলিত তাবলীগ জামাত ও ফাযায়েলে আমল বইয়ের মাঝে শিরক বেদাত নিয়ে দলীল ভিত্তিক সুন্দর আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও এই বইটা পড়লে প্রচলিত অনেক শিরক, বেদাত ও জাল হাদী সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে পারবেন। কেনো এইগুলো শিরক বেদাত সুন্দরভাবে ব্যখ্যা করা হয়েছে।
_______________________
২. দুয়া করাঃ
ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত কুফুরী ও শিরক বেঁচে থাকার জন্য আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতে হয়। এনিয়ে দুয়া মাসুরা আছে, সালাম ফেরানোর পরে দুয়া আছে, হিসনুল মুসলিম বই থেকে দেখে নেবেন।
ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় যেকোনো শিরক থেকে বাঁচার গুরুত্বপূর্ণ একটা দুয়াঃ
কেউ ৪০ বছর আল্লাহর ইবাদত করলো, কতযে নফল সুন্নত নামায পড়লো, রোযা রাখলো - কিন্তু মরণের আগে শিরক করে তোওবা না করেই মারা গেলো... একটা মাত্র শিরক তার সমস্ত আমল নষ্ট করে দেবে (নাউযুবিল্লাহ)!
কেয়ামতের দিন তার আমলগুলোর কোনো ওযন আল্লাহ তাকে দেবেন না, এইগুলোকে ধূলো বালিতে রূপান্তরিত করে দেবেন।
আর জেনে হোক বা না জেনেই হোক যেকেউ, যেকোনো সময় শিরকে লিপ্ত হতে পারে, যে যত বড় নেককারই হোক না কেনো (মা যা' আল্লাহ)।
এইজন্য শিরক করা অথবা অনিচ্ছায় শিরকে লিপ্ত হওয়া থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতে হয়।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) শেখানো একটা দুয়া আছে, কেউ যদি প্রতিদিন সকাল বিকাল একবার করে পড়েন, তাহলে আশা করা যায় আল্লাহ তাকে শিরক থেকে হেফাজত করবেন।
আপনি কি জানেন, সেই দুয়াটা কি?
দুয়াটা হচ্ছেঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أُشْرِكَ بِكَ وَأَنَا أَعْلَمُ، وَأَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لاَ أَعْلَمُ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা আন উশরিকা বিকা ওয়া আনা আ’লাম, ওয়া আস-তাগফিরুকা লিমা লা আ’লাম।
অনুবাদঃ হে আল্লাহ! আমার জানা অবস্থায় তোমার সাথে শিরক করা থেকে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর আমার অজানা অবস্থায় কোনো শিরক হয়ে গেলে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
আহমাদ ৪/৪০৩, হাদীসটি সহীহ, সহীহ আল-জামে ৩/২৩৩।
হিসনুল মুসলিমঃ পৃষ্ঠা ২৪৬।
______________________
৩. রাতের বেলা ঘুমানোর আগে একবার “সুরা কাফিরুন” পড়াঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
“এই সুরাটিতে (ক্বুল ইয়া আয়্যুহাল কাফিরুন বা সুরা কাফিরুন) শিরক থেকে বাঁচার শিক্ষা রয়েছে।”
আবু দাউদঃ ৫০৫৫, তিরমিযী, আহমাদ, ইমাম ইবেন হাজার আসকালানী ও শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
১০০০ সুন্নত, পৃষ্ঠা – ১৬০।
__________________________
উপরের বইগুলো ঢাকার কাটাবনে ইসলামী বইয়ের দোকানগুলোতে পাবেন। এছাড়া তাওহীদ পাবলিকেশানের দোকানগুলোতে পাবেন।
No comments:
Post a Comment