বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রথমবারের মত তার প্রশিক্ষণে পরিবর্তন এনেছে। এখন ভারত আর কোনো হুমকি নয়। সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা যে যুদ্ধ খেলায় (ওয়ারগেম) অংশ নিয়েছেন তাতে ভারত সীমান্তকে হুমকি (ওয়ারফ্রন্ট) বলে বিবেচনা করা হয়নি।
সোমবার দা নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন দিক থেকে ঘিরে রাখা ভারতকে হুমকি বলে মনে করত বাংলাদেশ। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে বাংলাদেশের সামরিক প্রশিক্ষণে তাই ভারতের (হুমকির বিষয়টি) মাথায় থাকা অস্বাভাবিক নয়।
যুদ্ধখেলা সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এতে তাদের যুদ্ধের মতবাদ এবং কৌশল শেখানো হয়। যুদ্ধ খেলায় শত্রুর নাম প্রকাশ করা হয় না। তবে আন্তর্জাতিক সীমান্তের অবস্থান এবং সামরিক বাহিনীর সংখ্যার ভিত্তিতেই নির্ধারিত হয় প্রতিপক্ষ কে।
ভারত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করছে। তাই এই যুদ্ধ খেলায় ভারতকে নিশানা করার নীতিতে সংশোধন ভারতের একটি অন্যতম লক্ষ্য।
একজন সিনিয়র কর্মকর্তা (ভারতের) বলেন, ‘আপনার সব মতবাদ (ডকট্রিন) এবং যুদ্ধের হালচাল যদি ভারতকে লক্ষ্য করে হয়, তবে তা প্রতিবেশীকে কিভাবে দেখা হয় তার ওপরে একটি মনসতাত্ত্বিক বাধা তৈরি করে।’
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখন আত্মরক্ষামূলক কৌশল নিচ্ছে যেখানে সৈন্যদের আগ্রাসী সেনাবাহিনীকে মোকাবিলার জন্য তৈরি করা হচ্ছে। এটা স্বভাবতই একটি স্পর্শকাতর ইস্যু যেটার জন্য দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন দরকার।
২০১২ সালে বাংলাদেশে দ্বিপাক্ষিক সফরকালে ভারতের সেনাপ্রধান তার বাংলাদেশের কাউন্টারপার্টকে (প্রতিপক্ষকে) এই অনুরোধ করেন।
তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা তাদের (বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে) যুদ্ধ খেলায় আন্তর্জাতিক সীমান্তের পরিবর্তে তাদের নিজেদের সীমান্তকে নির্ধারণ করতে বলেছি এবং সৈন্য সংখ্যায় পরিবর্তন আনতে বলেছি যাতে ভারতের সঙ্গে তা কাকতালীয়ভাবে না হয়ে যায়।’
এই আহ্বানের দু’বছর পর প্রতিরক্ষা বিভাগের নেতৃত্ব এবং স্টাফ কলেজ, যারা ঊর্ধ্বতন নেতাদের বাছাই করে প্রশিক্ষণ দেয়, এই পরিবর্তন এনেছে। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী গঠনের পর এই প্রথম এ ঘটনা ঘটলো।
No comments:
Post a Comment