Friday, February 28, 2014

দীপু মনির নির্বাচনী এলাকায় জামায়াতের উত্থান!

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনির নির্বাচনী এলাকায় শোচনীয়ভাবে হেরেছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা। এখানে উত্থান ঘটেছে জামায়াতের।

চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপির প্রার্থী জয়ী হলেও পরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীকে হারিয়ে বিশাল ভোটে জয়ী হয়েছেন জামায়াত প্রার্থী।

২৭ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে চাঁদপুর সদর উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত একক চেয়ারম্যান, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেয়। একইভাবে আওয়ামীলীগ সমর্থিত একক চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিলেও জয় পায় বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থী।

২১ হাজার ৩শ ৭৮ ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ইউসুফ গাজী হেরে যান বিএনপির প্রার্থী দেওয়ান সফিকুজ্জামানের কাছে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত মুনীরা বেগমের কাছে আওয়ামীলীগ সমর্থিত শিপ্রা দাস হারেন ৪৪ হাজার ৬শ ভোটের ব্যবধানে।

আর পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী নাজমুল পাটওয়ারী ও বিদ্রোহী প্রার্থী বেলায়েত হোসেন বিল্লাল ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীকে হারিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন শহর জামায়াতের আমীর এড. শাহজাহান মিয়া। তিনি পান ৫৪ হাজার ১শ ৭২ ভোট।

আর আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মাত্র ২৫৬৬৭ ভোট পেয়ে হন তৃতীয়। বিশাল ভোটের ব্যবধানে জামায়াত প্রার্থীর বিজয় নিয়ে চাঁদপুরে খোদ বিএনপির মধ্যেই চলছে নানা হিসাব নিকাশ।

মোরেলগঞ্জে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর দুই পায়ের রগ কেটে দিয়েছে আওয়ামী লীগের কর্মীরা

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা বিএনপি নেতা ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল মান্নান খান ওরফে মনা খাকে (৫৫) দুই পায়ের রগ কেটে দিয়েছে সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মোরেলগঞ্জ উপজেলার পোলেরহাট বাজার এলাকায় এঘটনা ঘটে। আহত আব্দুল মান্নান খাঁ মোরেলগঞ্জ উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও মোরেলগঞ্জ থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক । 
স্থানীয়রা জানায়, মোরেলগঞ্জ উপজেলার পোলেরহাট বাজারে নির্বাচনী গনসংযোগের সময় সন্ত্রসীরা প্রকাশ্যে সশস্ত্র হামলা করে তার দুই পায়ের রগ কেটে দেয়। এসময় অচেতন অবস্থায় তাকে ফেলে রেখে সন্ত্রাসীরা চলে যায়। পরে স্থানীয় এলাকাবাসী  তাকে উদ্ধারের পর প্রথমে তাকে পোলেরহাট ফাঁড়ি পুলিশ বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ও পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। আহত মনা খাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোরেলগঞ্জ থেকে ‘তালা’ প্রতীক নিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে গণসংযোগ করছিলেন। 
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছূক সরকার দলীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গণসংযোগ চলাকালে কয়েকজন পেছন থেকে তাকে তাড়া দেয়। এসময় তিনি নিজের পিস্তল বের করে গুলি করতে গেলে আওয়ামী লীগের কর্মীরা আরো উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এ সময়ে মনা খাঁ তার পিস্তল পুকুরে ফেলে দেন। সরকার দলীয় কর্মীরা তখন তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। 
বাগেরহাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মনা খাঁ সাংবাদিকদের বলেন,‘স্থানীয় আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি ডা. মোজাম্মেল হোসেনের নাতি জাপান বাবুল ও দৈবজ্ঞহাটি ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ফকিরের নেতৃত্বে তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী পোলেরহাট বাজারে গণসংযোগকালে তাকে ধরে মারপিট করে দুই পায়ের রগ কেটে দেয়। তিনি বলেন, ‘এরাই ২০০৪ সালে আমার বড় ভাই রামচন্দ্রপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ খাঁনকে নব্বই রশ্মি বাসষ্ট্যান্ডে প্রাকাশে গুলি করে হত্যা করে।’
মোড়েলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রকিব জানান, পোলেরহাট বাজারের ঘটনার সময়ে মনা খাঁর ফেলে দেয়া চার রাউন্ডগুলিসহ পিস্তলটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় স্থানীয় হায়দার আলী মোড়েলগঞ্জ থানায় অস্ত্র আইনে আব্দুল মান্নান ওরফে মনা খাঁর নামে একটি মামলা দায়ের করেছে।

Thursday, February 27, 2014

জামায়াতের ভাইস চেয়ারম্যান ৫৩, মহিলা ১৯

দু’দফার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোট ৫৩টিতে এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৯টিতে নির্বাচিত হয়েছেন জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত প্রার্থীরা।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে ১১৫টি ভাইস চেয়ারম্যান পদের ৩০টিতে জয় পেয়েছে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা। এ ছাড়া একই দিনের নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াতের ৯ জন বিজয়ী হয়েছেন।
এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন জামায়াত সমর্থিত ২৩ জন। সেসময় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াত সমর্থিত ১০ জন জয়ী হন।

দ্বিতীয় দফায়ও ১৯ দলের প্রাধান্য

দ্বিতীয় দফা উপজেলা নির্বাচনেও এগিয়ে আছে ১৯ দল সমর্থিত প্রার্থীরা। বিভিন্ন জায়গায় কেন্দ্র দখল, অনিয়ম, সহিংসতা ও ব্যাপক জালভোটের পরও ফলাফলে বিএনপি-জামায়াত জোটকে ছাড়াতে পারেনি আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা। ১১৫টি উপজেলায় রাত পৌনে ২টায় বাংলা ভিশনে প্রাপ্ত ১০৯টির মধ্যে বিএনপি ৫০টি, আওয়ামী লীগ ৪৪টি এবং জামায়াত ৮টি,  জাপা ১টি, স্বতন্ত্র ১টি ও অন্যান্যরা ৫টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন। রাজশাহীর বাঘা, বগুড়ার কাহালু ও শিবগঞ্জ, সাতক্ষীরার শ্যামনগর, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর, গাইবান্ধার পলাশবাড়ি, যশোরের মহেশপুর ও চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছে জামায়াত। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো ফলাফল নিচে তুলে ধরা হলোÑ
কাউখালী (পিরোজপুর) : কাউখালী উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ১৯ দল সমর্থিত বিএনপি নেতা এস এম আহসান কবির। তার প্রাপ্ত ভোট ১৩ হাজার ৭০০। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো: আবু সাঈদ পেয়েছেন আট হাজার ৪০০ ভোট।
কাপ্তাই : কাপ্তাই উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মো: দিলদার হোসেন। মোট ১৮টি কেন্দ্রে তার প্রাপ্ত ভোট আট হাজার ২৪। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মুফিজুল হক পেয়েছেন সাত হাজার ৭৩৫ ভোট।
মিরপুর (কুষ্টিয়া) : মিরপুর উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী কামারুল আরেফিন। তার প্রাপ্ত ভোট ৮৮ হাজার ৯৪৪। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আলহাজ আব্দুল হক পেয়েছেন ৪০ হাজার ৭২১ ভোট।
মুজিবনগর (মেহেরপুর) : মুজিবনগর উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম। তার প্রাপ্ত ভোট ২৯ হাজার ৯২৫। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জিয়া উদ্দিন বিশ্বাস পেয়েছেন ২৬ হাজার ৫৬৮ ভোট। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াত সমর্থিত জারজিস হোসেন ও ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী গুলনাহার বেগম নির্বাচিত হয়েছেন।
কুমারখালী (কুষ্টিয়া) : কুমারখালী উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আব্দুল মান্নান খান। তার প্রাপ্ত ভোট ৮২ হাজার ৩৪। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ১৯ দল সমর্থিত প্রার্থী নুরুল ইসলাম আনসার পেয়েছেন ৭৫ হাজার ৪৯৬ ভোট।
খোকসা (কুষ্টিয়া) : খোকসা উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সদর উদ্দীন। তার প্রাপ্ত ভোট ৪০ হাজার ৪৫১। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সৈয়দ আমজাদ আলী পেয়েছেন ৩০ হাজার ৩১৬ ভোট।
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : বোয়ালমারী উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এম এম মোশাররফ  হোসেন মুশা মিয়া। তার প্রাপ্ত ভোট ৫৭ হাজার ৩২৬। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মিজানুর রহমান মিলন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রেখা পারভীন নির্বাচিত হয়েছেন।
সালথা (ফরিদপুর) : সালথা উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ওয়াহিদুজ্জামান ওহিদ। তার প্রাপ্ত ভোট ২৯ হাজার ৯৭৫। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন পেয়েছেন ২৬ হাজার ১৪৩ ভোট। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত আসাদুজ্জামান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে খুরশিদা আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
বড়াইগ্রাম (নাটোর) : বড়াইগ্রাম উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আব্দুল আজিজ। তার প্রাপ্ত ভোট ৪১ হাজার ৫৩৩। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আয়নাল হক তালুকদার পেয়েছেন ৩২ হাজার ২৩৬ ভোট।
গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) : গোমস্তাপুর উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ১৯ দল  সমর্থিত প্রার্থী বিএনপির থানা সভাপতি বাইরুল ইসলাম। তার প্রাপ্ত ভোট ৭৩ হাজার ৬৪৮। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হুমায়ূন রেজা পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৬০০ ভোট। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াত সমর্থিত মাওলানা তাজির হোসেন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নুরুন্নেছা বাবলী নির্বাচিত হয়েছেন।
বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) : বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো: সফিকুল ইসলাম। তার প্রাপ্ত ভোট ৫০ হাজার ৭৬০। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আবু হায়াত নূরনবী পেয়েছেন ৪১ হাজার ৯৭১ ভোট।
বাঘা (রাজশাহী) : বাঘা উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী মাওলানা জিন্নাত আলী। তার প্রাপ্ত ভোট ৪৩ হাজার ৮৮২। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আজিজুল আলম পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৯০৫ ভোট।
বকশীগঞ্জ (জামালপুর) : বকশীগঞ্জ উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আব্দুর রউফ তালুকদার। তার প্রাপ্ত ভোট ৩৪ হাজার ৫৭২। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আবু জাফর পেয়েছেন ২১ হাজার ৯০০ ভোট।
মেলান্দহ (জামালপুর) : মেলান্দহ উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হাবিবুর রহমান চাঁন। তার প্রাপ্ত ভোট আট হাজার ৮৪৬। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী গোলাম হাফিজ নাহিন পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৬৭৪ ভোট।
ইসলামপুর (জামালপুর) : ইসলামপুর উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নবী নেওয়াজ খান। তার প্রাপ্ত ভোট ৩১ হাজার ৫০৫। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জিয়াউল হক জিয়া পেয়েছেন ৩০ হাজার ১৯৯ ভোট।
লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) : লোহাগাড়া উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দীন খান। তার প্রাপ্ত ভোট ৫০ হাজার ৪১৫। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ-এলডিপি সমর্থিত প্রার্থী জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুল পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৫৯৩ ভোট।
ডুমুরিয়া (খুলনা) : ডুমুরিয়া উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ১৯ দল সমর্থিত প্রার্থী খান আলী মনসুর। তার প্রাপ্ত ভোট ৮০ হাজার ৮৪১। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী গাজী আব্দুল হাদী পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৮৪১ ভোট।
 চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) : চিরিরবন্দর উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী আলহাজ আফতাব উদ্দিন মোল্লা। তার প্রাপ্ত ভোট ৬৪ হাজার ৮৪৯। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী তারিকুল ইসলাম তারিক। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত নুর আলম দুলু এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী রাসেদা আলম নির্বাচিত হয়েছেন।
ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) : ঘোড়াঘাট উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী শাহ মো: শামীম হোসেন চৌধুরী। তার প্রাপ্ত ভোট ২৪ হাজার ৩১৬। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আবদুর রাফে খন্দকার সাহানশাহ পেয়েছেন ২০ হাজার ৫৮২ ভোট। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াত সমর্থিত আলমগীর হোসেন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী রুশিনা সরেন নির্বাচিত হয়েছেন।
বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) : বীরগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আমিনুল ইসলাম ৫১ হাজার ৩৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াত প্রার্থী ডা: কে এম কুতুবউদ্দিন পান ৩২ হাজার ৫৩০। ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াত প্রার্থী এ কে এম কাওসার বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি প্রার্থী সেলিনা আক্তার বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
রোয়াংছড়ি (বান্দরবান) : রোয়াংজছড়ি উপজেলায় জনসংহতি সমিতির প্রার্থী ক্যবামং মার্মা ছয় হাজার ৫০৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে জয়লাভ করেছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পেয়েছেন আওয়ামী লীগের চহাই মং মার্মা প্রাপ্ত ভোট চার হাজার ৬০৬।
রুমা (বান্দরবান) : রুমা উপজেলায় জনসংহতি সমিতির সমর্থিত প্রার্থী অংথোয়াই চিং মার্মা ছয় হাজার ৯৪৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম ছিলেন আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট বাচিং থোয়াই মার্মা। তিনি পেয়েছেন দুই হাজার ৭৯৫ ভোট।
পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) : পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা নজরুল ইসলাম ৫৩ হাজার ৭১৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মোকছেদ চৌধুরী পেয়েছেন ২১ হাজার ৬২৫ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াত সমর্থিত আবু তালেব সরকার নির্বাচিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপির কোহিনুর আক্তার বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
নগরকান্দা (ফরিদপুর) : জেলার নগরকান্দা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নগরকান্দা বিএনপির সহসভাপতি সৈয়দ শাহিনুজ্জামান ২৯ হাজার ৩৫৯ বিজয়ী হয়েছেন বলে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে। ভোটে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত মনিরুজ্জামান বুলবুল ২৮ হাজার ৩৯০। ভাইস চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান সুমন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রওশন আরা বেগম জয়ী হয়েছেন।
গুরুদাসপুর (নাটোর) : গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল আজিজ পেয়েছেন ৪১ হাজার ৫৩৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আয়নাল হক তালুকদার পেয়েছেন ৩২ হাজার ২৩৬ ভোট।
বাগাতিপাড়া (নাটোর) : বাগাতিপাড়া উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত হাফিজুর রহমান ২৭ হাজার ২৫০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বকুল পেয়েছেন ২৩ হাজার ৭৫৯ ভোট।
নানিয়ারচর (রাঙ্গামাটি) : নানিয়ারচর উপজেলায় অ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমা (এম এন লারমা জনসংহতি সমিতি) সাত হাজার ৩৩২ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সুপন চাকমা (ইউপিডিএফ) পেয়েছেন ছয় হাজার ৯০৮ ভোট।
মহেশপুর (ঝিনাইদহ) : ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জামায়াত সমর্থিত আব্দুল হাই ৬৬২৮৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত ময়জদ্দিন হামিদ পেয়েছেন ৪৯৩৫৯ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত আব্দুল আহাদ বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াত সমর্থিত হাসিনা খাতুন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছে।
দেবিদ্বার (কুমিল্লা) : কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির প্রার্থী রুহুল আমিন ৬৭,৭৫৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ প্রার্থী তারেক মুন্সি ৫৮,৬২১ ভোট পেয়েছেন।
গাংনী (মেহেরপুর) : মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় তিনটি পদেই ১৯ দলীয় জোটের প্রার্থী বিজয় অর্জন করেছেন। চেয়ারম্যান পদে ৭৬ হাজার ৫৯৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোরাদ আলী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মোখলেছুর রহমান পেয়েছেন ৫৮ হাজার ৬৪৩ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান সংগ্রাম বিজয়ী হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী লাইলা আরজুমান বানু।
ভালুকা (ময়মনসিংহ) : ভালুকা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আলহাজ মো: গোলাম মোস্তফা বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রাপ্ত ভোট ৭৭ হাজার ৪১ এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আলহাজ মুহাম্মদ মোর্শেদ আলম পেয়েছেন, ৭২ হাজার ৪৪০ ভোট। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে আ’লীগের রফিকুল ইসলাম পিন্টু ও মহিলা ভাইস চেয়ানম্যান পদে আ’লীগের মনিরা সুলতানা মনি বিজয়ী হয়েছেন।
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) : ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলায় ১৯ দল সমর্থিত প্রার্থী মো: আইনুল হক মাস্টার ৪৪ হাজার ৬৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব¦ন্দ্বী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি শাহরিয়ার আজম মুন্না পেয়েছেন ২৫ হাজার ৪ শত ৪৭ ভোট।
কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) : কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী রশিদুল ইসলাম ৩৫৭৭৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির রাজাকুল ইসলাম রাজা পেয়েছেন ২৬৮০৭ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী রুহুল আমীন নির্বাচিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী শিরিনা বেগম নির্বাচিত হয়েছেন।
চাটমোহর (পাবনা) : চাটমোহর পৌরসভার মেয়র ও জেলা বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক হাসাদুল ইসলাম হীরা ৫৫ হাজার ৪০৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিদ্রোহী প্রার্থী রেজাউল করিম দুলাল। তিনি পেয়েছেন ৪৮ হাজার ৮১৭ ভোট।
ভাঙ্গুড়া (পাবনা) : ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ও বিদ্রোহী প্রার্থী নুর মোজাহিদ স্বপন আনারস প্রতীক নিয়ে ২৪ হাজার ৭৮৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো: বাকি বিল্লাহ পেয়েছেন ২২ হাজার ২১২ ভোট।
জয়পুরহাট সদর : জয়পুরহাট সদর উপজেলায় ১৯ দলীয় জোটের প্রার্থী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান ৮৫ হাজার ৪০৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত আরিফুর রহমান রকেট মোটরসাইকেল প্রতীক পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৬৪৭ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান (পুরষ) পদে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী জয়পুরহাট শহর জামায়াতের আমির হাসিবুল আলম লিটন এবং ভাইস চেয়ারম্যান মহিলা পদে বিজয়ী হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত জাহেদা কামাল।
কালাই (জয়পুরহাট) : কালাই উপজেলায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মিনফুজুর রহমান মিলন ৩৯ হাজার ৮৬৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ইব্রাহিম ফকির ৩২ হাজার ৯৭৯ ভোট পেয়েছেন। কালাই উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ ও মহিলা পদে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত সোহরাব আলী মামুন এবং মরিয়ম নেছা।
ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) : ক্ষেতলাল উপজেলায় বিএনপির প্রার্থী রওনকুল ইসলাম টিপু চৌধুরী ২৩ হাজার ৭৪৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত তাইফুল ইসলাম তালুকদার পেয়েছেন ২০ হাজার ৭৪৫ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মোস্তাকিম মণ্ডল এবং বিএনপি সমর্থিত শামিমা আকতার বেদেনা বিজয়ী হয়েছেন।
রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম) : রাজিবপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো: শফিউল আলম ৯৫৪৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মো: মোখলেছুর রহমান পেয়েছেন ৭৮১৬ ভোট।
রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) : কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মো: আবুল হাশেম হোসেন পেয়েছেন ২৯১৯৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী জাহিদ ইকবাল সোহরাওয়ার্দি পেয়েছেন ২২৮৮৬ ভোট।
নাগেশ্বরী উপজেলার : কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় ১৩৪টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১৩৪টির ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এ উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মো: আবুল কাশেম সরকার হেলিকেপ্টার প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫২২৩৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টি বিদ্রোহী প্রার্থী এ কে এম মোহিবুল হক খোকন কাপ-পিরিচ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৯১৫৬ ভোট।
সদর (চাঁদপুর) : চাঁদপুর সদর উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী দেওয়ান মো: শফিকুজ্জামান। তার প্রাপ্ত ভোট ৭৮ হাজার ৮১৪। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আলহাজ মো: ইউসুফ আলী পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৪৮৩ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াত সমর্থিত অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়া ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত মনিরা চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছেন।
বদরগঞ্জ (রংপুর) : বদরগঞ্জ উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ফজলে রাব্বী সুইট। তার প্রাপ্ত ভোট ৩৯ হাজার ৬৬১। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন সাহান পেয়েছেন ২৬ হাজার ৪২২ ভোট। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত সাইদুল ইসলাম এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী রুবিনা আক্তার নির্বাচিত হয়েছেন।
চকরিয়া (চট্টগ্রাম) : চকরিয়া উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জাফর আলম। তার প্রাপ্ত ভোট ৬৫ হাজার ১৯৩। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী খোকন মিয়া পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৭১ ভোট।
শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) : শ্যামনগর উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী আলহাজ মাওলানা আব্দুল বারী। তার প্রাপ্ত ভোট ৬৯ হাজার ৩১০। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী গাজী আনিসুজ্জামান আনিচ পেয়েছেন ২৯ হাজার ৬৩৮ ভোট।
বগুড়া অফিস : গতকাল বৃহস্পতিবার বগুড়া জেলার চারটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষে রাতে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে চেয়ারম্যান পদে জামায়াত সমর্থিত দুইজন, বিএনপি সমর্থিত একজন ও ১৯ দল সমর্থিত (বিএনপি) একজন নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যানের আটটি পদে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন।
শিবগঞ্জ (বগুড়া) : শিবগঞ্জ উপজেলায় জামায়াত সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মাওলানা আলমগীর হোসাইন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। মোট ৯৬ কেন্দ্রের মধ্যে ৯৫টির ফলাফলে তিনি পেয়েছেন ৮৯ হাজার ৬৬৪। নিকটতম বিএনপির মতিয়ার রহমান মতিন ৭৩ হাজার ৪৫৩ ভোট।
কাহালু (বগুড়া) : কাহালু উপজেলায় জামায়াত প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মাওলানা তায়েব আলী নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৫১৫ ভোট। নিকটতম বিএনপির ফরিদুর রহমান ফরিদ ২৮ হাজার ২০১ ভোট।
আদমদিঘি (বগুড়া) : আদমদিঘি উপজেলায় ১৯ দল সমর্থিত (বিএনপি) আব্দুল মুহিত তালুকদার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৬৫ হাজার ৭৬৪ ভোট। নিকটতম প্রাতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান রাজু পেয়েছেন ৩৮ হাজার ১০৮ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৯ দল সমর্থিত জামায়াতের ডা: ইউনুছ আলী ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ফারহানা আহমেদ মালা নির্বাচিত হয়েছেন।
শাজাহানপুর (বগুড়া) : শাজাহানপুর উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সরকার বাদল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ৭০টি কেন্দ্রের সব ক’টির ফলাফলে পেয়েছেন ৬৭ হাজার ৩১২ ভোট। নিকটতম বর্তমান চেয়ারম্যান জামায়াত প্রার্থী ইয়াছিন আলী পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৬২০ ভোট।
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) : ময়মনসিংহে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা  নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫৪ হাজার ৯০৭ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগের মাহমুদ হাসান সুমন  বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম বিএনপির (বিদ্রোহী) ফরিদ উদ্দিন পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৩৩৭ ভোট।
বালাগঞ্জ (সিলেট) : সিলেটের বালাগঞ্জ বিএনপির আবদাল মিয়া ৫৫ হাজার ২৮০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী  আওয়ামী লীগের মফুর আলী পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৫৮৩ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে খেলাফত মজলিসের আলী আজগর ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপির রেফা বেগম বিজয়ী হয়েছেন।
মুন্সীগঞ্জ সদর : মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার একতরফা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আনিসুজ্জামান আনিস জয়লাভ করেছেন। তিনি পেয়েছেন এক লাখ ৩০ হাজার ১১১ ভোট। আর নির্বাচন বয়কট করা প্রার্থী বিএনপি নেতা মোশারফ হোসেন পুস্তি পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৬৭৪ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন খান স্বপন পেয়েছেন এক হাজার ২৭২ ভোট।
শ্রীনগর : শ্রীনগর উপজেলা নির্বাচনে তিনটি পদেই বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। চেয়ারম্যান পদে শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ মমিন আলী ২৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সেলিম আহম্মেদ খানকে পরাজিত করেছেন। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সেলিম হোসেন খান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জেলা মহিলাদলের সাধারণ সম্পাদক জাহানারা বেগম জয়লাভ করেছেন।
সখিপুর (টাঙ্গাইল) : টাঙ্গাইলের সখিপুরে  বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত শওকত শিকদার। তিনি পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৫৩৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত টেলিফোন প্রতীকের খোরশেদ মাস্টার পেয়েছেন, ২৫ হাজার ৮৪৬ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত টিয়া পাখি প্রতীক নিয়ে আবদুস সবুর খান, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জি এম শরীফুল ইসলাম শফি। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী কলসী প্রতীকের তাহমিনা পারভীন মিনা।
ঝিনাইগাতি (শেরপুর) : ঝিনাইগাতিতে  বিজয়ী হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত আমিনুল ইসলাম বাদশা। তিনি পয়েছেন ৩২ হাজার ৪২৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের আনারস প্রতীকের এস এম এ ওয়ারেজ নাঈম। তিনি   পেয়েছেন ২৭ হাজার ৩৮৬ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন, বিএনপি সমর্থিত আমিনুল ইসলাম মক্কু পেয়েছেন ১৬ হাজার ৯৫৭ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান  স্বতন্ত্র প্রার্থী লাইলী বেগম  ২০ হাজার ৬৯০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
শিবপুর (নরসিংদী) : শিবপুর উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুল ইসলাম মৃধা পেয়েছেন ৩৭ হাজার ২৪০ ভোট । তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী টেলিফোন প্রতীকের  তোফাজ্জাল হোসেন পেয়েছেন ৩০ হাজার ১৪০ ভোট।

Wednesday, February 26, 2014

দ্বিতীয় ধাপের ভোটে আ.লীগ সমর্থিতদের কেন্দ্র দখলের হিড়িক

দ্বিতীয় ধাপে ১১৫টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের এজেন্টদের বের করে দিয়ে কেন্দ্র দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা।

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকে বেশ কয়েকটি উপজেলায় গণহারে কেন্দ্র দখলের ঘটনা ঘটেছে।

বরিশাল সদরের ৬৬টি কেন্দ্র থেকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেয়ার এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে জাল ভোটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় ৫০টি কেন্দ্র থেকে ১৯ দল সমর্থিত প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোতাহের হোসেন আলমগীর মালতিয়া।

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ১৫টি ভোটকেন্দ্র থেকে জামায়াত সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু হেনা এরশাদ হোসেনের (কাপ-পিরিচ) এজেন্টদেরকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর লোকজন মারধর করে বের করে দিয়েছে।

ফেনীর পরশুরামে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী কামাল উদ্দিন মজুমদারের সমর্থকরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে অন্তত পাঁচটি কেন্দ্র দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ১৯ দল সমর্থিত চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী আবু তালিব।

চাঁদপুরের মতলব ডিগ্রি কলেজ ভোটকেন্দ্রে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীর এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর লোকজন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে ব্যালটে সিল মারতেও দেখা গেছে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বনগ্রাম দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে আজ সকালে পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে। এতে একজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় পাঁচটি ভোট কেন্দ্র সম্পূর্ণ দখলে নিয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জাফরের লোকজন। ভোট শুরুর ২০ মিনিটের মধ্যেই তারা এ সব কেন্দ্র দখল করে নেয়।

এদিকে, ফেনী সদর উপজেলার ফতেহপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশ গুলিবর্ষণ করে। ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপে ১১৫টি উপজেলা পরিষদে ভোটগ্রহণ চলছে। ১১৭টি উপজেলায় ভোটগ্রহণের কথা থাকলেও আইনি জটিলতায় দুটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ স্থগিত রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

Tuesday, February 18, 2014

আল কায়েদা নেতার অডিও প্রচারের জন্য আমি দায়ী : রাসেল

আল কায়েদা নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরির নামে অডিও বার্তা প্রচারের কথা স্বীকার করেছেন টাঙ্গাইল থেকে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতারকৃত রাসেল বিন সাত্তার।

মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় র‌্যাবের সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে অডিও বার্তাটি প্রচারে নিজের সংশ্লিষ্ট থাকার কথা স্বীকার করেন রাসেল। এসময় র‌্যাবের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

রাসেল জানান, বিভিন্ন ইসলামিক সাইটের প্রতি তাঁর আগ্রহ রয়েছে। এই আগ্রহ থেকেই তিনি ‘দাওয়াহ ইল্লালাহ’ নামে একটি সাইটের লিংকে লাইক দেন। এরপর ওই সাইট থেকে আল জাওয়াহিরির ভিডিওটি তাঁর কাছে আসে। পরে সেটি তিনি নিজের বিভিন্ন সাইট ও ব্লগে ছড়িয়ে দেন।

তবে তিনি নিজে ওই ভিডিও সংগ্রহ করেছেন কি না, জানতে চাইলে রাসেল বলেন, লাইক দেওয়ায় ভিডিওটি তাঁর কাছে আসে। পরে তিনি সেটি তাঁর ব্লগে প্রচার করেন। ইউটিউবে তিনি ভিডিওটি আপলোড করেননি বলে জানান।

রাসেল বলেন, আমি ২০১০ সালে এসএসসি পাস করার পর ফেসবুক ব্যবহার করি। আমি সব সময় ইসলাম নিয়ে মতামত ব্যক্ত করে থাকি। ইসলাম নিয়ে লেখালেখি করি।

এর আগে একই সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের মিডিয়া এন্ড লিগাল উইংয়ের পরিচালক এটিএম হাবিবুর রহমান বলেন, কথিত অডিও বার্তাটি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশের পর র‌্যাবের গোয়েন্দা টিম কাজ শুরু করে। এর উৎস এবং কারা এর সঙ্গে জড়িত এ বিষয়ে অনুসন্ধান চালাতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় তাকে একাধিক টিমের সহযোগিতায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন উৎস থেকে নিশ্চিত হই যে, রাসেলের মাধ্যমেই বাংলাদেশে এই অডিও বার্তাটি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার হয়।

তিনি আরো জানান, রাসেল টাঙ্গাইলের একটি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র এবং একজন দক্ষ আইটি বিশেষজ্ঞ। সে ফেসবুক ও কয়েকটি ওয়েব সাইটের মাধ্যমে এর আগেও বিভিন্ন উগ্রমতবাদ ও বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা চালায়।

বহুল আলোচিত আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার কথিত অডিও বার্তাটি প্রচারের অভিযোগে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে টাঙ্গাইলের মাঝিপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। এসময় তার কাছ থেকে তিনটি মোবাইল সেট, দুইটি ল্যাপটপ ও বেশ কিছু বই উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে উগ্র ইসলামী চেতনা ধারণ করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিজস্ব মতবাদ প্রচার করতো রাসেল।

গত বছর ৫ মে হেফাজতের ঘটনার পর ৭ মে সে তার ব্যক্তিগত ই-মেইলে ইরানের প্রেসিডেন্টের কাছে একটি মেইল করেছিল।

http://www.sheershanews.com/2014/02/18/26383#sthash.IGcTjFRN.dpuf

দু’টি ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি

দু’টি ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি : প্রথমবারের মতো সুযোগ পেল ভারতীয় কোম্পানি, ২০-২৫ বছর যাবত্ তেল-গ্যাস উত্তোলন করে বিক্রি করবে

বঙ্গোপসাগরের অগভীর সমুদ্রের ৪ ও ৯ নম্বর ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান অয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস করপোরেশনের (ওএনজিসি) সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা।
গতকাল রাজধানীর পেট্রোসেন্টারে বাংলাদেশ সরকার, পেট্রোবাংলা এবং ওএনজিসি-বিদেশ, অয়েল ইন্ডিয়া ও বাপেক্সের মধ্যে এই দুটি অনুসন্ধান, উত্পাদন ও বণ্টন চুক্তি (পিএসসি) হয়। এর মধ্যে দিয়ে কোনো ভারতীয় প্রতিষ্ঠান প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে তেল, গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের সুযোগ পেল।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুত্ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এবং ভারতীয় হাই কমিশনার পঙ্কজ শরণ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
মডেল পিএসপি ২০১২ এর আওতায় গত বছর অগভীর সমুদ্রে ৯টি ও গভীর সমুদ্রে ৩টি ব্লকের জন্য দরপত্র ডাকে পেট্রোবাংলা। অগভীর সমুদ্রে আরও দুটি ব্লকে যুক্তরাষ্ট্রের কনোকোফিলিপস (ব্লক ৭) এবং স্যান্টোস-ক্রিস এনার্জির (ব্লক ১১) সঙ্গে চলতি মাসেই চুক্তি হবে বলে পেট্রোবাংলা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
২০১২ সালে সেপ্টেম্বরে উত্পাদন বণ্টন চুক্তি (পিএসপি) প্রণয়নের পর ভারতের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ ব্লকগুলো বাদ রেখে ডিসেম্বরে গভীর ও অগভীর সমুদ্রের ১২টি ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য দরপত্র ডাকে পেট্রোবাংলা।
এর মধ্যে অগভীর সমুদ্রের এসএস-০২ থেকে এসএস-০৪ ও এসএস-০৬ থেকে এসএস-১১ ব্লকের জন্য দুই দফার দরপত্র ডাকা হয়। চারটি ব্লকের জন্য তিনটি কোম্পানি দরপ্রস্তাব জমা দেয়।
কিন্তু গভীর সমুদ্রের ডিএস-১২, ডিএস-১৬ ও ডিএস-২১ ব্লকের জন্য তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকারী কোনো আন্তর্জাতিক কোম্পানির প্রস্তাব না পেয়ে গতবছর ফেব্রুয়ারিতে টেন্ডার প্রক্রিয়া স্থগিত করে পেট্রোবাংলা। ঠিকাদারদের দাবি অনুযায়ী শর্ত শিথিলের জন্য পিএসসি সংশোধন করা হয়।
এই তিন ব্লকের জন্য বর্তমানে দরপত্র মূল্যায়ন চলছে। তিনটি ব্লকেই একমাত্র দরদাতা কনোকোফিলিপস।
চুক্তিতে বলা হয়েছে, এসব কোম্পানি গ্যাসক্ষেত্র থেকে ২০ বছর এবং তেলক্ষেত্র থেকে ২৫ বছর যাবত্ উত্তোলন করে বিক্রি করতে পারবে। তারা সরকারকে কোনো রকম রয়্যালটি দেয়া ছাড়াই লভ্যাংশ নিজ দেশে পাঠাতে পারবে। তারা বিনা শুল্কে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানি করতে পারবে। পেট্রোবাংলাকে পাশ কাটিয়ে তারা তৃতীয় কোনো পক্ষে কাছে গ্যাস বিক্রি করতে পারবে।

Sunday, February 16, 2014

‘জাওয়াহিরির বক্তব্য প্রচারের ওয়েবসাইট আল-কায়েদার নয়’

বাংলাদেশ দেশ নিয়ে আল-কায়েদা প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরির বক্তব্য যে ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে তা আল-কায়েদার কোনো সাইট নয়। এমনকি এটি আল-কায়েদার কোনো কাছাকাছি সাইটও নয়।
বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তরের টকশো-তে অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর অ্যামিরেটাস ড. জিল্লুর রহমান খান এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের এতো খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে জাওয়াহিরির কথা বলবে তা মনে হয় না। এছাড়া জাওয়াহিরি খুব ভালোভাবেই জানেন বাংলাদেশ অন্যান্য মুসলিম দেশের মত নয়। ‘এটি একটি মুসলিম মডারেট দেশ। যদি এই দেশ অন্যান্য মুসলিম দেশের মতো হতো তাহলে গত এক বছরে যেসব সহিংসতা হয়েছে, তারপরে আজকে দেশের এই অবস্থা থাকতো না’ যোগ করেন ড. জিল্লুর।
তিনি বলেন, ‘জিহাদের প্রকৃত অর্থ বা ব্যাখ্যা বিকৃত হয়েছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন দেশের স্কলারদের সাথে আলোচনা করে সবাই একমত হয়েছে যে, জিহাদ মানে মানবতার কল্যাণে সংগ্রাম। কিন্তু আল কায়েদা বা অন্যরা তা বিকৃত করেছে।’
এই প্রফেসর অ্যামিরেটাস বলেন, ‘যখন ইসলামের ওপর আক্রমণ হয়, তখন তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ হচ্ছে সবচেয়ে ছোট জিহাদ। আর নিজেকে সংশোধনের জন্য মনের বিরুদ্ধে যে জিহাদ, তা সবচেয়ে বড় জিহাদ।’
এ সময় একাত্তর সংযোগে অংশ নিয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখতে হবে। যদি দেশীয় বিশেষজ্ঞরা তার সুরাহা করতে না পারে তাহলে বিদেশিদের সহযোগিতা নেয়া হতে পারে। তিনি বলেন, এখানে কোনো ভিডিও দেখানো হয়নি। কয়েটি অডিও বার্তা দেয়া হয়েছে। এই অডিওতে ভয়েস পরিবর্তনের কোনো কাজ হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার।
এম সাখাওয়াত বলেন, ‘বক্তব্যের ধরন আল-কায়েদার মতো নয়। তাদের অন্যান্য বক্তব্য আন্তর্জাতিক মিডিয়া কেন্দ্রিক হয়ে থাকে। আর এই বক্তব্যে এমন কিছু নাম এসেছে যা আল-কায়দার জানার কথা নয়।’
‘মনে হচ্ছে- একটি স্ক্রিপ্ট তার হাতে কেউ তুলে দিয়েছে আর তিনি সেটি পড়ে দিয়েছেন। আর যে সাইটে বক্তব্য এসেছে সেটি আল কায়েদার নয়, এটি একটি ওপেন সাইট, এখানে যে কেউ তার বক্তব্য দিতে পারে।’ যোগ করেন তিনি।
এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, ‘আল-কায়েদার যে কোনো বক্তব্য নিয়ে সাধারণত আন্তর্জাতিক মিডিয়া গুরুত্ব সহকারে খবরটি প্রচার করে। কিন্তু এই বক্তব্য নিয়ে এখনও কোনো মিডিয়া নিউজ করেনি।’ তিনি বলেন, এটি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কলহের কারণেও কেউ এটি করে থাকতে পারে। সরকারের উচিত প্রকৃত বিষয় খুঁজে বের করা।
ড. জিল্লুর বলেন, বাংলাদেশের সাথে অবশ্যই অন্যান্য মুসলিম দেশের সাথে অনেক পার্থক্য আছে। এখানে আল-কায়েদার প্রভাব থাকতে পারে না। কারণ এই দেশে শিয়া-সুন্নির মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। এখানে মহিলাদের ক্ষমতায়ন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যা আল কায়েদা গ্রহণ করে না। আল-কায়েদা যাবে মধ্যপ্রাচ্যে বা পাকিস্তানে। তারা বাংলাদেশে এখন এসে সময় নষ্ট করবে না।

আবার সেই নোংরা পথেই হাটছে আওয়ামীলীগ

আবার সেই নোংরা পথেই হাটছে আওয়ামীলীগ। হেফাজতকে,বাংলার ইসলাম মুসলমানকে জঙ্গি প্রমান করতে,এবং বিএনপিকে হঠাতে গিয়ে তারা র-য়ের সাহায্যে ব্যবহার করলো ইজরাইলের মোসাদকে!

মার্কিন এবং পশ্চিমা বিশ্ব যেহেতু এখন বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচন এবং গণতন্ত্রকে সহায়তা করছে, আর সেটা বিএনপির পক্ষে যাচ্ছে, তাই পশ্চিমা বিশ্বকে বাংলাদেশ সম্পর্ক তাদেরকে ভুল মেসেজ দেয়ার জন্য এই তথাকথিত “আল কায়েদা” বড়ি ছেড়েছে মোসাদ!
হাসিনার মূল লক্ষ ক্ষমতায় থাকা; আর সে কারনেই বাংলাদেশের মুসলমানদেকে নিয়ে এইসব অপপ্রচার। মনে পড়ে, ২০০৭ সালে “ওয়ান ইলেভেনের ঠিক আগে আগে ভারতীয়দের আয়োজনে বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাংলাদেশকে Another Afghanistan.....Hub of Terrorism....নানা বিধ নিউজ ও কলাম লেখানো হয়েছিল, যা পুরোটাই ছিল বানোয়াট, মূলত: মইনের সামরিক শাসনের জন্য পশ্চিমাদেরকে ব্যবহার করার অপচেষ্টা ছিল।

একটা কথা পরিস্কার। বাংলাদেশে ধর্মযুদ্ধ বা জিহাদের কোনো পরিবেশ বা সুযোগ নাই। দেশে এখন যা চলছে তা রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা ও ক্ষমতা দখলের লড়াই। এটাকে ভুল ব্যাখা করার কেনো সুযোগ নাই।

‘ছিয়ানব্বইয়ের নির্বাচনের চেয়ে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন কয়েক শ গুণ বেশি খারাপ’ : রনি

‘ছিয়ানব্বইয়ের নির্বাচনের চেয়ে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন কয়েক শ গুণ বেশি খারাপ’

গোলাম মাওলা রনি। রাজনীতিবিদ। সাবেক সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সাংবাদিক হিসেবেও পরিচয় দিতে তিনি ভালোবাসেন। বর্তমান সরকারের বিগত টার্ম শুরুর সময় থেকেই সংসদ ও সংসদের বাইরে সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। বিশেষ করে, টেলিভিশন ‘টক শো’তে সরকারের সমালোচনা তাকে ব্যাপক আলোচিত করে। জনগণের সমর্থন পান, জনপ্রিয় হন। আবার সাংবাদিক নির্যাতন করে নিন্দিতও হন তিনি। ২০১৩ সালের ২০ জুলাই, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ইনডিপেনডেন্টের সাংবাদিককে প্রহার করলে দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ ঘটনার জের ধরেই তাকে কারাগারে যেতে হয়। আলোচিত, বিতর্কিত এই তরুণ রাজনীতিক সম্প্রতি মুখোমুখি হয়েছিলেন সাপ্তাহিক কাগজের। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আশিক রহমান। 

প্রশ্নঃ আপনার একাধিক পরিচয় রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে। কোন পরিচয়ে আপনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন?

গোলাম মাওলা রনিঃ নিজেকে আমি মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। আমরা সবাই মানুষ। মানুষ যে কারণে মানুষ, সেটা মানবিক গুণাবলির কারণেই মানুষ। আমরা সমাজে অনেকেই নিজেকে অনেক বড় মানুষ হিসেবে পরিচয় দিই, কিন্তু মানবিক গুণাবলি সংরক্ষণ করা বা মানবিক গুণাবলির প্রচার-প্রসার করার ক্ষেত্রে আমরা প্রচণ্ড স্বার্থপর। প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই কিছু মানবিক গুণাবলি সঞ্চিত থাকে, আবার অমানবিক গুণাবলিও সঞ্চয় থাকে। কিন্তু আমরা কী করি- মানবিক গুণাবলি লুকিয়ে রেখে, অমানবিক গুণাবলিই প্রকাশ করি। আর সেই সব মানুষই সমাজে সবচেয়ে বড় মানুষ হিসেবে পরিচিত হন। অমানবিক গুণাবলিকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসতে সাহস পান। যা বেশির ভাগ মানুষই করেন না, তা-ই তারা করেন। আমরা সৃষ্টির সেরা জীব। আমাদের মানুষ হওয়ার চেষ্টা থাকা দরকার। মানুষের বিবেক, মানুষের ভদ্রতা, মানুষের ধর্মবোধ, মানুষের জ্ঞান যা কিছু আলস্নাহ তাআলা দিয়েছেন, তার সঠিক ব্যবহার করার চেষ্টা করছি আমি। তার পরও যদি জানতে চান, কোন কাজটি করতে আমি পছন্দ করি কিংবা কোন পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি, তাহল বলব, সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। কারণ সাংবাদিকতা হলো যোগ্যতা, মেধাবী ও সৃষ্টিশীল মানুষের কাজ। সৃষ্টিশীল কাজের প্রতি আমার আগ্রহ সব সময়ের।

প্রশ্নঃ দশম সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন নিতে চাননি কেন? আগে থেকেই কি বুঝতে পেরেছিলেন, দল আপনাকে মনোনয়ন দেবে না ?

গোলাম মাওলা রনিঃ দলের মনোনয়ন নেওয়াটা ব্যাপার ছিল না। মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আমার বিশ্বাস ছিল। মনোনয়ন না চাওয়ার কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে দলের হাইকমাণ্ডের সঙ্গে আমার যে সুসম্পর্ক ছিল, বিশ্বাস ও আস্থা ছিল, কারাগারে যাওয়ার ঘটনার মধ্য দিয়ে আমার প্রতি তাদের আস্থাটা কমে গেছে। ফলে ওই অবস্থাতে দলের মনোনয়ন চাওয়াটা আমার কাছে অসম্মানজনক মনে হয়েছে। আর, সব দল যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করত, তাহলে হয়তো আমি মনোনয়ন চাইতাম। সার্বিক পরিস্থিতিতে আমি হয়তো স্বতন্ত্র প্রার্থীও হতাম। সব দল অংশগ্রহণ না করার কারণে আমার কাছে মনে হলো যে এবারের নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করবেন, তারা কখনো জাতির কাছে, দেশের মানুষের কাছে সম্মানিত মানুষ হিসেবে আখ্যায়িত হবেন না, বরং ভবিষ্যতে যখন তারা বলবেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আমি একজন এমপি ছিলাম, তখন মানুষ এমপিকে ঠাট্টা-মশকরা করবেন। সমালোচনা করবেন। যেমন অতীতের ’৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা করতে শুনি, এটা ’৯৬ সালের নির্বাচনের চেয়েও অধিকতর খারাপ। ’৯৬ সালের নির্বাচনকে যেভাবে মানুষ খারাপ মনে করছে, খারাপের দিক থেকে ৫ জানুয়ারি ২০১৪ সালের নির্বাচন কয়েক শ গুণ বেশি খারাপ।

প্রশ্নঃ দল কিংবা প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান কি তাহলে ভুল ছিল? প্রধানমন্ত্রী ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন···

গোলাম মাওলা রনিঃ আমি মনে করছি, এই রকম একটি দলের কর্তাব্যক্তিরা যারা সব সময় নেতা-কর্মীদের উদ্দীপনা জুগিয়েছেন, দলের কোটি কর্মী-সমর্থক যারা দলের মালিক, তারা কেউ ৫ জানুয়ারির নির্বাচন করতে চায়নি। ফলে দলকে দায়ী করা যায় না। দলের কিছু কর্তাব্যক্তি, কর্মকর্তা- যারা বুঝেছিলেন যে তাদের জনপ্রিয়তা নেই। ওই ব্যক্তিরাই প্রধানমন্ত্রীকে প্রভাবিত করেছেন, উদ্বুদ্ধ করেছেন, উৎসাহিত করেছেন নির্বাচনে যাওয়ার জন্য। আমাদের দলে আড়াই শর মতো সংসদ সদস্য ছিলেন, এর মধ্যে শ দুয়েক এমপি ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে আস্থাশীল ছিলেন না। সরাসরি ভোট যুদ্ধে জয়লাভ করার ব্যাপারে নিজেরাই বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিলেন। সেই লোকগুলোই সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল নীতিনির্ধারক পর্যায়ে। ওই লোকগুলোই একটি ভোটারবিহীন নির্বাচনে দলকে ঠেলে দিয়ে, এত বড় ঐতিহ্যবাহী একটি দলকে কলঙ্কিত করেছে, অসম্মানের মুখে ফেলেছে। দেশের লাখ লাখ আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থক আছেন, যারা এই কথাগুলো ভাবছেন, কিন্তু বলতে পারছেন না। বলার জায়গা পাচ্ছেন না। আমি তাদের পক্ষে হয়ে কথা বলেছি, দল থেকে মনোনয়ন পেপার না নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছি। 

প্রশ্নঃ বর্তমানে আওয়ামী লীগে আপনার অবস্থান কী ?

গোলাম মাওলা রনিঃ আমি একজন সংসদ সদস্য ছিলাম। এর আগে আমি আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলাম, কিন্তু আমার কোনো পদ-পদবি ছিল না। আমি এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় কর্মী আছি। তাই মনে করি আমি। আর, আমার যে চরিত্র, আমি যদি কখনো কর্মী-সমর্থকদের থেকে বিছিন্ন হয়ে যাই, তাহলে আমি দেশবাসীকে জানিয়ে প্রকাশ্য বলব, আমি আর টিকতে পারছি না। আমি দল ছেড়ে দিলাম। আমি যতক্ষণ না তা বুঝছি, ততক্ষণ আমি দলের চিন্তা-চেতনায়, আদর্শের প্রতি আস্থাশীল আছি। দলের সঙ্গেও আছি। দলের সবার সঙ্গেও আমার যোগাযোগ রয়েছে। 

প্রশ্নঃ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও কি যোগাযোগ আছে?

গোলাম মাওলা রনিঃ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ কিংবা কথা- কোনোটাই হয় না আমার। কেন কথা হয় না, আমার মনে হয়েছে তার নির্দেশেই আমাকে কারাগারে যেতে হয়েছে। উনি আমাকে স্নেহ করতেন। আমিও তাকে সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি। কিন্তু আমি কোনো কারণ খুঁজে পাইনি, কেন তিনি আমাকে কারাগারে পাঠালেন? আমি অপেক্ষায় আছি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার, কথা বলার জন্য। আমার অভিমানের জায়গাটা পরিষ্ড়্গার করার জন্য। আর, প্রধানমন্ত্রী আমার ওপর অভিমান করেননি, রাগ করেছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর ওপর অভিমান করেছি। কারণ, তিনি আমাকে জোর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন। আমার ওপর জুলুম করেছেন। আমি জুলুমের শিকার হয়েছি। তিনি আমাকে শাস্তি দিয়েছেন। তিনি তো আমার ওপর রাগ কিংবা অভিমান করতে পারেন না। প্রধানমন্ত্রী তার কর্মীদের ওপর অভিমান করেন না, ক্ষুব্ধ হন। তিনি আমার ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ক্ষুব্ধ হয়ে শাস্তি দিয়েছেন। শাস্তি দেওয়ার ফলে আমার মনে হয়েছে, উনার ওপর আমার একটা অধিকার তৈরি হয়েছে। উনি আমার মান ভাঙাবেন। এটা আমার পাওনা। এখন আমি প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। তিনি যদি মনে করেন, রনিকে আওয়ামী লীগে দরকার রয়েছে, তাহলে আমি থাকব। যদি তিনি মনে করেন, রনির দরকার নেই, আমি থাকব না। তিনি যদি চুপচাপ থাকেন, আমিও চুপচাপ থেকে কাজ করে যাব দলের জন্য।

প্রশ্নঃ শোনা যাচ্ছে, বিএনপি থেকে তো আপনাকে প্রস্তাব দিয়েছে···। নতুন দল গঠন কিংবা দল বদল করছেন?

গোলাম মাওলা রনিঃ হঁ্যা, আমার কাছে প্রতিনিয়ত প্রস্তাব আসছে। নতুন নতুন প্রস্তাব আসছে। বিএনপি থেকে এসেছে, জাতীয় পার্টি থেকে এসেছে, ছোট ছোট দলগুলো থেকেও এসেছে। আমি চিন্তা করছি, দেশে যদি গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তাহলে ভারতের আম আদমীর মতো নতুন কোনো দল গঠন করা যায় কি না, যেখানে থাকবেন তরুণেরা। আমার যে পরিচিতি গড়ে উঠেছে, আমি ডাকলে অনেকেই আসবেন। দেশ-বিদেশে থাকা অনেক তরুণেরা আসবেন। কিন্তু তাদেরকে জায়গা দেওয়ার মতো যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ দরকার, সে পরিবেশটা যদি সৃষ্টি না হয়, তাহলে তো তারা উৎসাহ হারিয়ে ফেলবেন। আর গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করা যায় না, পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে যায়। ঊনসত্তরের কথাই ধরুন- ঊনসত্তরের গণ-অভুøত্থান বঙ্গবন্ধু সৃষ্টি করেননি, বঙ্গবন্ধুই ঊনসত্তরের সৃষ্টি। এ দেশের গণতন্ত্র কেউ সৃষ্টি করেননি, নব্বইয়ের গণ-অভুøত্থান সৃষ্টি হয়েছে। তারপর এ দেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আম আদমীর দলটির সৃষ্টির জন্য ভারতকে ৬০-৭০ বছর ধরে গণতন্ত্রচর্চা করতে হয়েছে। তা সম্্‌ভব হয়েছে তাদের দীর্ঘ গণতান্ত্রিক চর্চায়। আজ যদি আমি ঢাকা শহরে এক লাখ কর্মী নিয়ে সমাবেশ করি, বর্তমান দেশে যে রাজনৈতিক সংস্ড়্গৃতি আছে, যারা ক্ষমতায় আছেন, তারা কখনোই এ ধরনের একটি সমাবেশ করতে দেবে না। আর যদি কোনো কারণে সরকার সমাবেশ করতে দেয়, তাহলে সরকারি দল ও বিরোধী দল এক হয়ে, সমাবেশের বিরুদ্ধাচরণ করবে। এর ফলে যে তরুণেরা আছেন, তারা আরও অনুৎসাহিত হবেন। এমনিতেই তারা রাজনীতিতে আসতে চান না, এ রকম ঘটনা হলে তারা আরও রাজনীতিবিমুখ হয়ে পড়বেন। তারা একটি সুন্দর গণতান্ত্রিক পরিবেশ চান। আমিও অপেক্ষা করছি, অপেক্ষা করব, জীবনের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করব এমন একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশের। আর, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমার রক্তের সম্পর্ক। আমার রাজনৈতিক বোধ এবং বুদ্ধি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি এই দলের রাজনীতি করছি। আমার পরিবারের এই দলের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। এই দলের প্রতি ভালো লাগা-মন্দে পাশে থাকা, ভালোবাসা-স্নেহ, প্রেম-প্রীতি সবই রয়েছে। আমি এক গোলাম মাওলা রনি না থাকলেও আওয়ামী লীগের কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ, এই দলের সঙ্গে হাজার হাজার, লাখ লাখ কর্মী-সমর্থক রয়েছে। তারা এই সংগঠনটিকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসেন। আর আমি এখন যে অবস্থানে আছি, দেশের গতানুগতিক রাজনৈতিক ধারায় এক পদ-পদবি ধরে রাখার জন্য বড় দলগুলোতে মর্যাদার হানি করে, মাথা নিচু করে, আত্মমর্যাদা বিসর্জন দিয়ে থাকতে হয়। এই অবস্থাটা শিক্ষার কারণে, অবস্থার কারণে হয়ে থাকে। অন্যরা তা পারে, কিন্তু আমি সেটা পারছি না। এখন যদি আওয়ামী লীগের সঙ্গে সক্রিয় কর্মী হিসেবে আমাকে নির্বাচন করতে হয়, আমি দলের জন্য কাজ করব। দলও একই অবস্থার সৃষ্টি করবে যে, হঁ্যা, রনিকে আওয়ামী লীগের দরকার আছে। কিন্তু দেখা গেল- আমি সকালে একটা লাথি খাচ্ছি, বিকেলে অপমানিত হচ্ছে। এরপর বছরের পর বছর বয়োবৃদ্ধ সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মতো পড়ে থাকা, সেই মানসিক অবস্থায় আমি নেই। সেই ক্ষেত্রে আমি যেটা করব, স্বতন্ত্র কিছু একটা করার চেষ্টা করব। নিজের ও দেশের জন্য। আর সেটা নির্ভর করবে পরিস্থিতির ওপর। সেটাও যদি না হয়, শুধু এমপি হওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্কের দরকার নেই। জনপ্রিয়তা থাকলে স্বতন্ত্র নির্বাচন করেও এমপি হওয়া যায়। স্বতন্ত্র এমপি হয়ে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক মতাদর্শ চিন্তা-চেতনা আমার মতো করে প্রচার করতে পারব। এতে করেও অনেক লোককে উজ্জীবিত করা যাবে। তবে হুট করে দল পরিবর্তন কাউকে স্বাচ্ছন্দ্য দেয় না, বরং সময় প্রতিকূলে চলে যায়। 

প্রশ্নঃ আপনার সমসাময়িক অনেকেই রাজনীতি করছেন। মন্ত্রীও হয়েছেন। শাহরিয়ার আলম, জুনাইদ আহমেদ পলকের কথা আমরা বলতে পারি। তাদেরকে মন্ত্রী হিসেবে দেখে আপনার কেমন লাগে? কোনো রকম হতাশা কিংবা ঈর্ষা কাজ করে?

গোলাম মাওলা রনিঃ না, আমার সে রকম কোনো হতাশা কিংবা ঈর্ষা হয় না। আমার মধ্যে এই সব ক্ষুদ্রতা কাজ করে না। তারা সবাই আমার সহকর্মী ছিলেন। ছোট ভাইয়ের মতো ছিলেন। আলস্নাহই তাদের ওই পদে বসিয়েছেন। আমি তাদেরকে অভিনন্দন জানাই। স্বাগত জানাই। দোয়া করি, তারা যেন অনেক ভালো করতে পারেন। তবে যে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তারা এমপি হয়েছেন, মন্ত্রী হয়েছেন, সেই মানসিকতাটা আমি এখন পর্যন্ত অর্জন করতে পারিনি। সে জন্য আমার কোনো আফসোস নেই। আজকের এই পর্যায়ের আসার জন্য শাহরিয়ার ও পলককে যে শ্রম দিতে হয়েছে, মেধা খরচ করতে হয়েছে, ওই শ্রম ও মেধা দুটোর একটাও আমার নেই। এটা কোনো অভিমানের কথা নয়, সত্য কথা। কারণ, তারা রাজনীতির জন্য যে শ্রম দিয়েছেন, দিয়ে যাচ্ছেন- মন্ত্রিত্ব পাওয়ার জন্য যে সাধনা করেছেন, এর একটা কাজও আমি করিনি, কখনো করতেও পারব না। আমাকে মন্ত্রী বানাতে চাইলেও আমি মন্ত্রী হতে পারতাম না! কারণ- এত স্পষ্ট কথা বলে, মাথা উঁচু করে সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলে দলীয়ভাবে কোনো পদ-পদবি ধরে রাখা আমাদের সমাজে এখনো অসম্্‌ভব ব্যাপার। 

প্রশ্নঃ সাম্প্রতিক নির্বাচন নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী ?

গোলাম মাওলা রনিঃ নির্বাচন নিয়ে আমার দল আওয়ামী লীগ খুব তাড়াতাড়ি করে ফেলেছে। আমাদের ৪০% ওপরে ভোটার আছে। এই ৪০% ভোটারকে কিন্তু আমরা ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত করতে পারতাম। কারণ, আওয়ামী লীগের এই ৪০% ভোট একরকম নিশ্চিত ছিল, তারা ভোটকেন্দ্রে গেলে নৌকায়ই পড়ত সেসব ভোট। আমাদের প্রস্তুতি ও কৌশলগত ভুলের কারণে তা করতে ব্যর্থ হয়েছি। কেন্দ্রীয় অফিস থেকে প্রার্থীদের সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা ছিল না, এর ফলেই ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল কম। ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেলেন, এটাও ছিল একটা ভুল সিদ্ধান্ত। দলের উচিত ছিল নির্বাচনটাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করা। করার ব্যবস্থা করা। নির্বাচনের তারিখ যদি একটু পরিবর্তন করে পিছিয়ে দিত, তাহলে সরকারকে একতরফা নির্বাচনের অভিযোগের দায় নিতে হতো না। বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতার কারণে দ্রুত নির্বাচন করা জরুরি ছিল সরকারের এই যুক্তি ঠিক হলেও তা খুব দুর্বল যুক্তি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩ জন নির্বাচিত হওয়ার ফলে মানুষ সব সহিংসতা ভুলে যাবে। মনে রাখবে একতরফাভাবে ১৫৩ জনের জয়ী হওয়ার বিরল ঘটনাকেই। এই দায় আওয়ামী লীগকে নিতে হবে। দলের কর্মী-সমর্থক ও দেশের মানুষকে আস্থায় নিয়ে নির্বাচন করলে আমরা জয়লাভ করতে পারতাম। এতে, এত বড় কেলেঙ্কারির বোঝা দলকে বইতে হতো না। আমরা এখন যে জয়ের ওপর বসে আছি, তার জন্য অসংখ্য বদনাম মাথায় নিতে হচ্ছে কেবল পরিকল্পনার অভাবে। আমাদের লোক ছিল, সহযোগী ছিল। কর্মী-সমর্থকেরও কোনো অভাব ছিল না। মহাজোটের সবাইকে আমরা বাইরে ঠেলে দিতে পারতাম। আলাদা নির্বাচন করতে পারতাম। সবটা কাজ একটা সমঝোতার মাধ্যমে হতে পারত। আমাদের সঙ্গে সতেরো-আঠারোটা দল আছে, এর সঙ্গে আরও ২০-২৫টা দলকে আমরা নির্বাচনে নিয়ে আসতে পারতাম। ৪০-৪৫টা দলকে যদি আমরা নির্বাচনে নিয়ে আসতে পারতাম, ৪০-৪৫ পার্সেন্ট ভোটও নিশ্চিত করতে পারতাম। তাহলে বিএনপিকে এক ঘরে করতে পারতাম। আওয়ামী লীগের বড় ব্যর্থতা হলো, বিএনপিকে এক ঘরে করতে না পারা। বিরোধী দল যেসব অভিযোগ উত্থাপন করেছে- আমরা সরকারি দল, আমাদের টেলিভিশন আছে, পত্রিকা আছে, আমরা সবই বলছি। বিরোধী দলের অভিযোগের জবাব দিচ্ছি, কিন্তু মানুষ সেসব বিশ্বাস করছে না। 

প্রশ্নঃ নির্বাচনের আগে ও পরে মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা হয়েছে, এখনো হচ্ছে। মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে আপনার ভাবনা কী? যদি নির্বাচন হয়, তা কত সময়ের মধ্যে হলে ভালো হয়?

গোলাম মাওলা রনিঃ আমি মনে করি, নির্বাচনটা যদি কাল হয়, বেশ ভালো হয়। মধ্যবর্তী নির্বাচন দিলে আওয়ামী লীগ পরাজিত হবে, নিঃসন্দেহে আওয়ামী লীগ পরাজিত হবে। দ্বিতীয়বার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ের কোনো সম্্‌ভাবনা নেই। কারণ, দেশের মানুষ একটা পরিবর্তনের মানসিকতার মধ্যে আছে। একমাত্র যারা আওয়ামী লীগ করে, আওয়ামী লীগই করে। বিএনপি করলে, বিএনপির মধ্যেই তারা থাকে। আর, যারা সুইং ভোটার, তারা একটা দল বা লোককে বেশি দিন ভোট দেন না। দিতে চান না। কিছু কিছু এলাকা ছাড়া বেশির ভাগ মানুষই পরিবর্তন চায়। মানুষের এই মানসিকতা আরও পরে পরিবর্তন হবে। মধ্যবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আপাতত পরাজিত হলেও দীর্ঘ মেয়াদে তার সুফল পাবে। সংকটের স্থায়ী সমাধানে না গেলে, ব্যথা-বেদনার ট্যাবলেট খেয়ে খেয়ে দেহকে দীর্ঘ মেয়াদে মারাত্মক অসুখের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া নিশ্চয়ই কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। 

প্রশ্নঃ আপনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার তো একটা বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই বিপর্যয়ের কারণ কি আপনি আবিষ্ড়্গার করতে পেরেছেন? 

গোলাম মাওলা রনিঃ আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার কোনো বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েনি। আমি বিপর্যয়েও নেই, বরং আমি ও আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার আগের চেয়ে ভালো রয়েছে। ভালোভাবেই চলছে সবকিছু। আর মানুষের আবেগও আমি শ্রদ্ধা করি। যারা মনে করেন ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতি, ক্ষমতার সঙ্গে থাকতে হবে, এসবকেই যদি মনে করেন রাজনীতি, তাহলে আমি বিপর্যয়ের মধ্যে আছি। এ ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে আমার দ্বিমত নেই। আর যারা মনে করেন, রাজনীতি বলতে গণমানুষের কথা বলা, রাজনীতি বলতে মানুষের উন্নয়ন করার মনমানসিকতা, রাজনীতি করতে হলে প্রজ্ঞা, মেধা ও অভিজ্ঞতা থাকা দরকার- এই রকম একটা মানুষ যে কিনা সমাজে তার কর্মকাণ্ড বন্ধ করেনি। এসব জিনিস আমার মধ্যে থাকায় আমি কোনো রাজনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে নেই। এসব বিবেচনায় আমি অতীতের চেয়েও অনেক ভালো অবস্থায় আছি। কেন ভালো অবস্থায় আছি, তার আরও কারণ হলো, আমার কাছে মনে হয় এখন আমি আগের চেয়ে অনেক মুক্তভাবে কথা বলতে পারছি। পদ-পদবি হারানোর ফলে আমার একটি আত্ম-উপলব্ধি এসেছে। আমি যেসব মানুষের চেহারা-সুরত এত দিন দেখে এসেছি, এখন বাস্তব অবস্থা দেখতে পাচ্ছি। যা আমি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বুঝতে পারিনি। 

প্রশ্নঃ ‘টক শো’ দিয়ে যে গোলাম মাওলা রনির উত্থান, সেই ‘টক শো’তে মিডিয়া ক্রেজ রনিকে আগের চেয়ে কম দেখা যায়, কেন?

গোলাম মাওলা রনিঃ ‘টক শো’তে কম দেখার মূল কারণ হলো, যারা বিটিভির মতো কট্টর সরকারের সমর্থক, তাদের টেলিভিশনে আমি যাই না। তারা আমাকে দাওয়াত করছে, কিন্তু আমি যাচ্ছি না। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে আমি কারাগারে যাওয়ার আগে- যেমন একাত্তর, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনে কখনো আমি যাইনি। এটিএননিউজে তিন-চারটি অনুষ্ঠানে গিয়েছি। তবে সর্বশেষ তিন বছর এটিএননিউজ, ইনডিপেনডেন্ট, একাত্তর টেলিভিশনে যাইনি। ‘সময় টিভিতে’ মাঝেমধ্যে যেতাম, আমি কারাগার থেকে বের হওয়ার পর ‘সময়’ আমাকে সস্ত্রীক দাওয়াত করেছিল, আমি যাইনি। যাইনি কারণ আমি কারাগারে যাওয়ার আগে আমার একটি রেকর্ডটি ছিল···। মোহনাতে যাই না, ওদের যে টিআরপি তাতে আমার পোষায় না। আমি মাছরাঙায় যাই না, কারণ তাদের ‘টক শো’ জনপ্রিয় নয়। সবকিছুকে মাথায় রেখে, চিন্তা করে আমাকে পথ চলতে হয়। যেমন আগে আমি সবার সঙ্গে ‘টক শো’তে বসতে পারতাম। পাপিয়ার সঙ্গে বসতাম, মনির সঙ্গেও বসতাম। এখন আমি সবার সঙ্গে বসি না। বসতে চাইও না। আগে ফোন করলে সঙ্গে কে আছেন জিজ্ঞাসা করতাম না, এখন জিজ্ঞেস করি। যখন বলেন, ওমুকে আছেন। যদি দেখি ওই মানুষটার সঙ্গে আমার মিলে না, তখন আমি কৌশলে তা এড়িয়ে যাই। তবে সম্পর্ক রাখি কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে। ফলে আগের মতো আমার অনুষ্ঠান হচ্ছে না। এখন অনুষ্ঠান করছি হাতে গোনা কয়েকটি টিভিতে। এর মধ্যেঃ এসএটিভি, আরটিভি, এনটিভি, একুশে, চ্যানেল আই, বাংলাভিশনে। 

প্রশ্নঃ মিডিয়ার সহযোগিতাতেই আজকের গোলাম মাওলা রনিকে সবাই চেনে। কিন্তু সেই মিডিয়ার সংবাদকর্মীদের সঙ্গেই আপনার বিরোধ। এমনটা কেন হলো?

গোলাম মাওলা রনিঃ আমার সঙ্গে পাঁচ-ছয়টা পত্রিকার মামলা চলছে। প্রথম শ্রেণীর পত্রিকা, যেমন প্রথম আলো, কালের কণ্ঠ, যুগান্তর ও সমকাল- এই কয়টি পত্রিকার সঙ্গে আমার মামলা চলছে সেই ২০০৯ সাল থেকে। এর কারণ হলো- পত্রিকার ও টেলিভিশনের যারা মালিক, এই বেনিয়া গোষ্ঠী এখানে স্বার্থসংশিস্নষ্ট ব্যাপারে কাজ করে থাকে। আমার কিছু কথাবার্তা, আচার-আচরণ বেনিয়া গোষ্ঠীকে আঘাত করেছে। ফলে প্রথম থেকেই ওই বেনিয়া গোষ্ঠী মনে করেছে, এই ছেলেটাকে দূর বা স্টপ করা দরকার। ফলে আমার ওপর যে মিডিয়ার কিংবা বেনিয়া গোষ্ঠীর আক্রমণ, তা ২০০৯ সাল থেকেই ছিল। প্রথমে ছিল প্রিন্ট মিডিয়া, পরবর্তীকালে ইলেকট্রনিক মিডিয়া। এরপরে দেখা গেল, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মধ্যে আমার যারা ভালোবাসার মানুষ, আমার ব্যক্তিগত শুভাকাঙ্ড়্গী যারা, তাদেরকে বোঝাতে পারলাম যে তোমাদের মালিকেরা আমাকে যা মনে করেন, আমি আসলে সে রকম মানুষ নই। ফলে ওই সমস্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা, সাংবাদিক তাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করেছি। বাংলাদেশের চ্যানেল, নিউজ এডিটর, তাদের একটা অ্যাসোসিয়েশন আছে, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ওই ঘটনার পরে তারা কিন্তু প্রকাশ্যে আমাকে নিষিদ্ধ করেছিল। টেলিভিশন মালিক সমিতিও আমাকে নিষিদ্ধ করেছিল, যে গোলাম মাওলা রনিকে কোনো টেলিভিশনে আনা যাবে না। এই রকম অবস্থাতে যে আমি সব টেলিভিশনে যাচ্ছি, এটা কিন্তু সহজ ব্যাপার না। তারপর আবার বেছে বেছে অনুষ্ঠানে যাচ্ছি। আলস্নাহই ভালো জানেন, এর রহস্য কোথায়। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, এসব ‘টক শো’ কেবল ফেইস চেনায় মানুষকে। ‘টক শো’তে বলা আমার কোনো কথা, কোনো ডায়ালগ কিন্তু দেশের মানুষের মুখে মুখে ফিরেনি। আমি হয়তো এক হাজার ডায়ালগ দিয়েছি চমকিত হওয়ার মতো, কিন্তু একটা ডায়ালগও মানুষের মুখে মুখে ফিরছে না। কিন্তু আমি লেখালেখিতে যে শব্দগুলো ব্যবহার করছি, সেগুলোর অনেকগুলোই কিন্তু এখন মানুষের মুখে মুখে ফিরছে। তাই আমি এখন আমার মেধা, বুদ্ধি ও বিদ্যার পুরোটাই ব্যয় করছি শিক্ষামূলক কর্মকাণ্ডে। সেখানেই আমি সময় বেশি দিচ্ছি। এখন আমি প্রতি সপ্তাহে বাংলাদেশ প্রতিদিনে লিখছি। ফেসবুকে লিখছি। নাটকও লিখছি। বইমেলার জন্যও বই লিখেছি। 

প্রশ্নঃ ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিকের সঙ্গে আসলে ওই দিন কী হয়েছিল? টেলিভিশন স্ত্র্নিনে দেখা গেল আপনি আঘাত করছেন, আবার আপনি তা অস্বীকারও করেছেন। 

গোলাম মাওলা রনিঃ নিঃসন্দেহে কিছু একটা হয়েছে সেদিন। তবে যা কিছু হয়েছে তা আমি আদালতে প্রমাণ করব। আদালতে এসবের প্রমাণ আছে। আর বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আমি কোনো কথা বলব না। আমি এই মামলাটাকে ছাড়বও না, চালিয়ে যাব। আমার যতক্ষণ সামর্থø থাকবে, শেষ পর্যন্ত তা আমি দেখব। আদালতে আমি প্রমাণ করে দেব, আসলে সেদিন সেখানে কী ঘটেছিল।

প্রশ্নঃ ইনডিপেনডেন্টের সঙ্গে আপনার বিরোধের কারণ কি সালমান এফ রহমান? শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি সম্পর্কে লেখালেখির কারণেই কি ওই টেলিভিশনের সঙ্গে আপনার দ্বন্দ্ব? 

গোলাম মাওলা রনিঃ শেয়ারবাজার নিয়ে আমার বক্তব্য স্পষ্ট। শেয়ারবাজারের এই কেলেঙ্কারিটা আওয়ামী লীগ ও তৎকালীন মহাজোট সরকারকে মারাত্মক বিব্রত করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর কোনো সংযোগ নেই। এর সঙ্গে দল যুক্ত নয়। সরকারেরও এতে কোনো সম্পৃক্ততা নেই। দলের নাম ব্যবহার করে কিছু দুর্বৃত্ত শেয়ারবাজারকে ম্যানুপুলেট করেছে। দুবৃêত্তদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি সালমান এফ রহমান। অভিযুক্ত এই ব্যক্তি যখন দলের নীতিনির্ধারণী বৈঠকে, নীতিনির্ধারণী জায়গায় তার উপস্থিতি দেখি, দেশের মানুষের মতো আমার শরীরও জ্বলে। জ্বালা থেকেই আমি একটা লেখা লিখেছিলাম, দরবেশ বলেছিলাম, ওটার কারণেই জনাব সালমান এফ রহমান আমার ওপর বিক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। এই লেখার প্রতিক্রিয়ায় তিনি যা করেছেন, তা দেশবাসী দেখেছেন।

প্রশ্নঃ কাদের মোলস্নাকে নিয়ে আপনার লেখা চিঠি বিতর্ক তৈরি করেছে···

গোলাম মাওলা রনিঃ যারা চিঠি নিয়ে আমার সমালোচনা করেছেন, তারা না বুঝে সমালোচনা করেছেন। ওই চিঠি কিংবা লেখাটা একান্তই একজন মৃতুøপথযাত্রী মানুষের অন্তিম ইচ্ছেপূরণ। এই ইচ্ছেপূরণের মধ্যে আমি মনে করি না কোনো অন্যায় আছে। এর সঙ্গে কাদের মোলস্নার যুদ্ধাপরাধ, পাকিস্তানের সঙ্গে তার

জলজ্যান্ত মানুষকে গ্রেপ্তার করে মেরে ফেলছে র‌্যাব: নুরুল কবির

ঢাকা: ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক ও বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক নুরুল কবির বলেছেন, বাংলাদেশে র‌্যাব সৃষ্টির পর থেকেই তারা এবং তাদের সঙ্গে অপরাপর আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে।

জলজ্যান্ত মানুষকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব তাদের মেরে মেলছে। আর এ বিষয়টি তারা নিজেরা যেমন জানে, দেশের মানুষও তা জানে। একই সঙ্গে সারা বিশ্বও তা জানে। এগুলো ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা ছাড়া আর কিছু নয়।

রেডিও তেহরানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নুরুল কবির এসব মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, র‌্যাবসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে যারা মারা গেছেন তাদের সবাইকে খুব ভালো মানুষ মনে করার কারণ নেই। তবে এটাও মনে করার কারণ নেই সমাজের চোখে যারা অপরাধী তাদের বিনাবিচারে হত্যা করা যাবে। এ ধরনের হত্যা করার অধিকার তাদের নেই।

নুরুল কবির বলেন, দেশের বিভিন্ন পর্যায় থেকে র‌্যাবের এসব হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হলেও র‌্যাব তাতে ভ্রুক্ষেপ করেনি। কারণ, র‌্যাবের এসব হত্যাকাণ্ডকে সরকার অনুমোদন দিয়ে যাচ্ছে; এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক ব্যাপার। যেভাবে র‌্যাব হত্যা করে চলেছে তাতে তাদের চেয়ে চরমপন্থী কেউ হতে পারে না।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আগের টার্মে দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি খুব খারাপ ছিল একথা সত্য। তারা বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল নির্বাচনের আগে। নির্বাচনে জয়লাভের পর ক্ষমতায় এসে সরকারি এবং বেসরকারি সেক্টর মিলে প্রায় দেড় বছর পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের কোনো উদ্যোগ নিল না। এর মধ্যে বিদ্যুৎ সঙ্কট আরো তীব্র আকার ধারণ করল।

নুরুল কবির বলেন, সে অবস্থা থেকে পরিত্রাণের নামে কিছু কোম্পানির সঙ্গে অত্যন্ত চড়া দামে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের চুক্তি করল সরকার। আর এই বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো যারা পেয়েছে তাদের অধিকাংশের সঙ্গে সরকারের সুস্পষ্ট সম্পর্ক রয়েছে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনকে কেন্দ্র করে জনগণের টাকা কতগুলো কোম্পানির মধ্যে বিতরণ করার জন্যই সরকার ভাড়া বিদ্যুৎ প্রকল্প আমদানি করে।

নিউ এজ সম্পাদক বলেন, ভাড়া বিদ্যুৎ প্রকল্পে অনেক দুর্নীতি হয়েছে। আর এ প্রকল্পে দুর্নীতি হবে এ বিষয়টি আওয়ামী লীগ সরকার পরিষ্কারভাবে জানতো। আর জানত বলেই এ প্রকল্প শুরুর আগে তারা ইনডেমনিটি আইন পাস করে। ফলে বিদ্যুতের নামে এই সরকার যেসব কর্মকাণ্ড করেছে তা অত্যন্ত গর্হিত অপরাধ।

সৌদিতে বাংলাদেশীদের আকামা বদল শুরু আজ

সৌদি আরবে আজ থেকে বাংলাদেশী শ্রমিকরা আকামা পরিবর্তনের সুযোগ পাবে। শ্রম মন্ত্রণালয় বাংলাদেশী শ্রমিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ায় সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকরা চাকরি ও মালিক/ নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করতে পারবে। আজ থেকে আকামা পরিবর্তনের সুযোগ কার্যকর হবে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র থেকে জানানো হয়। এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ।
সৌদি রাজ কার্যালয়ের আদেশে পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, সংস্কৃতি, তথ্য ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীবর্গের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির সুপারিশ ও স্বীকৃতি অনুযায়ী সৌদি সরকার এ সিদ্ধান্ত নেয়। শ্রম মন্ত্রণালয়ের জনসেবা এবং কর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জিয়াদ আল-সায়িঘ জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয়ের ইলেক্ট্রনিক পোর্টালে সেবাটি পাওয়া যাবে। সৌদি প্রেস এজেন্সি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যাদের অপরাধ কর্মের রেকর্ড আছে, যারা আইনি মামলা প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে, পলাতক এবং সৌদিতে অবৈধভাবে প্রবেশকারীদের জন্য এ সুযোগ প্রযোজ্য হবে না। বাংলাদেশের কনস্যুল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম আরব নিউজকে বলেন, ৫ বছর আগে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পদক্ষেপ বাংলাদেশী কর্মীদের মর্যাদা ফিরিয়ে দিয়েছে। এতে করে অনেক কর্মী দেশে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পাবে। সরকারি এ সিদ্ধান্তের জন্য তিনি সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানান। আজ থেকে নতুন ভিসা ইস্যু এবং স্পন্সরশিপ পরিবর্তনের আবেদন গ্রহণ করা হবে বলে সৌদি কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ দূতাবাসকে জানিয়েছে। এর আগে সৌদি সরকার অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ হওয়ার সুযোগ দেয়। ওই সময়সীমার মধ্যে প্রায় ৮ লাখ বাংলাদেশী কর্মী তাদের বৈধতা করে নিয়েছেন। আর ১০০০-এর মতো বাংলাদেশী ফেরত এসেছেন। ২০১৩ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুলতান বিন মোহাম্মদ আল হাজার নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি দল বাংলাদেশে শ্রমিক বাছাই, নিয়োগ এবং নিরাপত্তা প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করতে বাংলাদেশ সফরে আসে। বাংলাদেশ এখন সৌদি আরবে চাকরি প্রত্যাশী কর্মীদের জন্য ব্যাপক প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা চালু করেছে। সেই সঙ্গে রয়েছে সৌদির স্থানীয় সংস্কৃতি এবং আরবি ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম। আরব নিউজের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারী পরিহার করে উভয় সরকারের মধ্যে সরাসরি নিয়োগদান প্রক্রিয়া প্রচলন করার জন্য রিয়াদকে প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা।

মানব পতাকায় রেকর্ড ভাঙল পাকিস্তান

সবচেয়ে বড় মানব পতাকা তৈরি করে গিনেস বুকে স্থান করা বাংলাদেশের রেকর্ড ফের ভেঙেছে পাকিস্তান। রোববার সকালে লাহোরের হকি স্টেডিয়ামে ২৯ হাজার চারশ জন অংশগ্রহণকারীর মাধ্যমে পাকিস্তানের মানব পতাকা তৈরি করা হয়।
বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা এ পতাকা তৈরি করে। পরে শিক্ষার্থীরা নাচ, গান ও স্লোগান দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করে। এর আগে ২০১২ সালে পাকিস্তান ২৪ হাজার ২শ জনের অংশগ্রহণে সবচেয়ে বড় মানব পতাকা তৈরি করে গিনেস ওয়ার্ল্ডে রেকর্ডে তাদের নাম লেখায়। পরে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও সেনাসদস্যদের নিয়ে করা মানবপতাকা পাকিস্তানের রেকর্ড ভাঙে। এ সময় ২৭ হাজার একশ ১৭ জন মানব পতাকা তৈরিতে অংশ নেন। রোববার বাংলাদেশের রেকর্ড ভাঙার পর পিওয়াইএফ স্টিয়ারিং কমিটির প্রধান হামজা শাহবাজ শরীফ বলেন, পাঞ্জাবের সিংহরা দেশের নাম হিমালয়ের চেয়েও ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছে। যখন বৃষ্টি হচ্ছে, তখন এই কঠিন কাজটি তারা করেছে। গিনেস অ্যাডজুডিকেটর লিও এবং মারিয়া আনাতালিয়া লাইন ও সারি গুণে পাকিস্তানের মানবপতাকা তৈরিতে পাকিস্তানের রেকর্ড গড়ার ঘোষণা দেন।

Saturday, February 15, 2014

ঢাবি ছাত্রলীগের অপহরণ নাটক চলছেই

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কর্তৃক ছাত্র অপহরণকে প্রেমের নামে চালিয়ে দেয়ার রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দুইদিন পেরিয়ে গেলেও ছাত্র অপহরণ ও এর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে কি না তার প্রকৃত রহস্য এখনো উদঘাটন করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

এদিকে অপহৃত ছাত্র এবং অপহরণকারী ঢাবি ছাত্রলীগ নেতার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার দা সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরেফিন সিদ্দিক সুজনের একান্ত ঘনিষ্ঠ কর্মী ও হলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক লিয়ন বহিরাগত এক ছাত্রকে অপহরণ করে। পরে তাকে হলের ২১৯ নম্বর রুমে আটকে রাখে। তিনদিন আটকে রেখে ওই ছাত্রের ওপর অমানষিক নির্যাতন চালায় আরেফিন সিদ্দিক সুজনের ক্যাডার লিয়ন ও ছাত্রলীগ কর্মীরা।

বুধবার বিকেলে রুমের বেলকনি থেকে লাফিয়ে ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করতে থাকে অপহৃত ওই ছাত্র। সঙ্গে সঙ্গে লিয়নও রুম থেকে লাফিয়ে ছেলেটিকে আটক করে হলের পশ্চিম পাশের সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় নিয়ে যায়। তারপর থেকেই ওই শিক্ষার্থী ও লিয়নকে খুঁজে পওয়া যাচ্ছে না।

হলের একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, দোতলা থেকে লাফিয়ে পড়ার পর ওই শিক্ষার্থী ‘বাঁচাও বাঁচাও, আমাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে’ বলে চিৎকার করে। এতে আশেপাশের শিক্ষার্থীদের বিষয়টি নজরে পড়ে। পরে হল শাখা ছাত্রলীগ ও লিয়ন বিষয়টি প্রেম ঘটিত কারণে লাফিয়ে পড়েছে বলে অপপ্রচার চালাতে থাকে এবং ওই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে বলে ছাত্রলীগের কর্মীরা দাবি করে।

কিন্তু ঘটনার পরপরই হলের আবাসিক শিক্ষকরা যখন বিষয়টি যাচাই করতে আসেন তখন ছাত্রলীগের কর্মীরা অপহরণকৃত ওই শিক্ষার্থীর পরিচয় গোপন রাখে। এবং কোনো হাসপাতালের কত নম্বর ওয়ার্ডে নেয়া হয়েছে তা জানায় না। রাজধানীর স্কয়ার হাপাতালের কথা শোনা গেলেও সেখানে ওই শিক্ষার্থীকে খুঁজে পাওয়া যায় না।

ঘটনার এক ঘণ্টার মধ্যে লিয়নের কোনো খোঁজ পায় না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার মোবাইলে ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন ধরেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এর পর থেকেই লিয়ন ও অপহরণকৃত ওই শিক্ষার্থীর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

এ ঘটনার পর সন্ধ্যায় হল কর্তৃপক্ষ ২১৯ নম্বর রুমটি সিলগালা করে এবং বিষয়টির রহস্য উদঘাটন করার জন্য আবাসিক শিক্ষক মো. আমিনুল হককে প্রধান করে দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ১৭ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা দেয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু ঘটনার দুই দিন পেরিয়ে গেলেও ঘটনার মূলরহস্য এবং ওই শিক্ষার্থীর পরিচয় উদঘাটন করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হলে আবাসিক শিক্ষক এবং তদন্ত কমিটির প্রধান মো. আমিনুল হক শীর্ষ নিউজকে বলেন, অপহরণকারী ছাত্রলীগ ক্যাডার লিয়নকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার নম্বরে ফোন করা হলে সে ফোন ধরছে না। এছাড়া অপহরণকৃত ওই শিক্ষার্থীরও কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। যার ফলে রহস্য উদঘাটন করতে আমাদের সময় লাগবে।

হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল শীর্ষ নিউজকে জানান, ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হচ্ছে। তদন্ত কমিটি এ ব্যাপারে তদন্ত করে যাচ্ছে। খুব শিগগিরই রহস্য উদঘাটন হবে। যদি লিয়নের বিরুদ্ধে ছাত্র অপহরণের কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে তাকে শাস্তি দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ছাত্রলীগ ক্যাডার লিওনের নেতৃত্বে সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের কর্মীরা সৌহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাদদের গ্রুপটিকে নিয়ন্ত্রণ করে বলে জানা গেছে।
ঢাবি ছাত্রলীগের অপহরণ নাটক চলছেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কর্তৃক ছাত্র অপহরণকে প্রেমের নামে চালিয়ে দেয়ার রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দুইদিন পেরিয়ে গেলেও ছাত্র অপহরণ ও এর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে কি না তার প্রকৃত রহস্য এখনো উদঘাটন করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এদিকে অপহৃত ছাত্র এবং অপহরণকারী ঢাবি ছাত্রলীগ নেতার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার দা সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরেফিন সিদ্দিক সুজনের একান্ত ঘনিষ্ঠ কর্মী ও হলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক লিয়ন বহিরাগত এক ছাত্রকে অপহরণ করে। পরে তাকে হলের ২১৯ নম্বর রুমে আটকে রাখে। তিনদিন আটকে রেখে ওই ছাত্রের ওপর অমানষিক নির্যাতন চালায় আরেফিন সিদ্দিক সুজনের ক্যাডার লিয়ন ও ছাত্রলীগ কর্মীরা। বুধবার বিকেলে রুমের বেলকনি থেকে লাফিয়ে ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করতে থাকে অপহৃত ওই ছাত্র। সঙ্গে সঙ্গে লিয়নও রুম থেকে লাফিয়ে ছেলেটিকে আটক করে হলের পশ্চিম পাশের সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় নিয়ে যায়। তারপর থেকেই ওই শিক্ষার্থী ও লিয়নকে খুঁজে পওয়া যাচ্ছে না। হলের একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, দোতলা থেকে লাফিয়ে পড়ার পর ওই শিক্ষার্থী ‘বাঁচাও বাঁচাও, আমাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে’ বলে চিৎকার করে। এতে আশেপাশের শিক্ষার্থীদের বিষয়টি নজরে পড়ে। পরে হল শাখা ছাত্রলীগ ও লিয়ন বিষয়টি প্রেম ঘটিত কারণে লাফিয়ে পড়েছে বলে অপপ্রচার চালাতে থাকে এবং ওই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে বলে ছাত্রলীগের কর্মীরা দাবি করে। কিন্তু ঘটনার পরপরই হলের আবাসিক শিক্ষকরা যখন বিষয়টি যাচাই করতে আসেন তখন ছাত্রলীগের কর্মীরা অপহরণকৃত ওই শিক্ষার্থীর পরিচয় গোপন রাখে। এবং কোনো হাসপাতালের কত নম্বর ওয়ার্ডে নেয়া হয়েছে তা জানায় না। রাজধানীর স্কয়ার হাপাতালের কথা শোনা গেলেও সেখানে ওই শিক্ষার্থীকে খুঁজে পাওয়া যায় না। ঘটনার এক ঘণ্টার মধ্যে লিয়নের কোনো খোঁজ পায় না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার মোবাইলে ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন ধরেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এর পর থেকেই লিয়ন ও অপহরণকৃত ওই শিক্ষার্থীর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনার পর সন্ধ্যায় হল কর্তৃপক্ষ ২১৯ নম্বর রুমটি সিলগালা করে এবং বিষয়টির রহস্য উদঘাটন করার জন্য আবাসিক শিক্ষক মো. আমিনুল হককে প্রধান করে দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ১৭ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা দেয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু ঘটনার দুই দিন পেরিয়ে গেলেও ঘটনার মূলরহস্য এবং ওই শিক্ষার্থীর পরিচয় উদঘাটন করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হলে আবাসিক শিক্ষক এবং তদন্ত কমিটির প্রধান মো. আমিনুল হক শীর্ষ নিউজকে বলেন, অপহরণকারী ছাত্রলীগ ক্যাডার লিয়নকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার নম্বরে ফোন করা হলে সে ফোন ধরছে না। এছাড়া অপহরণকৃত ওই শিক্ষার্থীরও কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। যার ফলে রহস্য উদঘাটন করতে আমাদের সময় লাগবে। হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল শীর্ষ নিউজকে জানান, ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হচ্ছে। তদন্ত কমিটি এ ব্যাপারে তদন্ত করে যাচ্ছে। খুব শিগগিরই রহস্য উদঘাটন হবে। যদি লিয়নের বিরুদ্ধে ছাত্র অপহরণের কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে তাকে শাস্তি দেয়া হবে। উল্লেখ্য, ছাত্রলীগ ক্যাডার লিওনের নেতৃত্বে সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের কর্মীরা সৌহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাদদের গ্রুপটিকে নিয়ন্ত্রণ করে বলে জানা গেছে।





Friday, February 14, 2014

দেলোয়ার শিকদার ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আলাদা ব্যক্তি বলে স্বীকার করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী : শুনানিতে আইনজীবী

মাওলানা সাঈদীর আপিল
দেলোয়ার শিকদার ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আলাদা ব্যক্তি বলে স্বীকার করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী : শুনানিতে আইনজীবী

মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিল শুনানিতে তার আইনজীবী বলেছেন, দেলোয়ার শিকদার এবং দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী যে আলাদা ব্যক্তি তা স্বীকার করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মধুসূদন ঘরামী। এ সাক্ষী জেরায় স্বীকার করেছেন দেলোয়ার শিকদার নামে পিরোজপুরে একজন কুখ্যাত রাজাকার ছিল এবং স্বাধীনতার পর মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় লোকজন মিলে পিরোজপুরে তাকে হত্যা করে থাকতে পারে।
প্রধান বিচারপতি মো: মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চে যুক্তি উপস্থাপনের সময় মাওলানা সাঈদীর পক্ষে অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান এ তথ্য তুলে ধরেন। মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে ১৪ নম্বর অভিযোগ তথা হোগলাবুনিয়া গ্রামে হিন্দুপাড়ায় আগুন দেয়া এবং শেফালী ঘরামীকে ধর্ষণের অভিযোগ বিষয়ে তিনি গতকাল যুক্তি পেশ করেন। যুক্তি উপস্থাপনে তাকে সহায়তা করেন ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ আল আমিন।
অ্যাডভোকেট শাহজাহান বলেন, মাওলানা সাঈদীর পিতার নাম ইউসুফ সাঈদী। আর দেলোয়ার শিকদারের পিতার নাম রসুল শিকদার। ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মধুসূদন ঘরামীকে দেলোয়ার শিকদারের পিতার নাম রসুল শিকদার উল্লেখ করে নির্দিষ্টভাবে প্রশ্ন করা হয়েছিল। এর জবাবে তিনি স্বীকার করেছেন স্বাধীনতার পর দেলোয়ার শিকদার পিরোজপুরে নিহত হয়ে থাকতে পারে।

মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ হলোÑ পূর্বে তার নাম ছিল দেলোয়ার শিকদার। স্বাধীনতার পর তিনি তার নাম পরিবর্তন করে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ধারণ করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষের বেশ কয়েকজন সাক্ষীও একই কথা বলেছেন। তারা বলেছেন বর্তমানে যে সাঈদীর বিচার হচ্ছে তিনিই ১৯৭১ সালে ছিলেন দেলোয়ার শিকদার।
অপর দিকে মাওলানা সাঈদীর পক্ষে আইনজীবীরা ট্রাইব্যুনালে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে প্রমাণের চেষ্টা করেছেন দেলোয়ার শিকদার নামে পিরোজপুরে একজন কুখ্যাত রাজাকার ছিল। তবে সে বর্তমানে বেঁচে নেই। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় তার অপকর্মের কারণে যুদ্ধের পর সে জনরোষের মুখে পড়ে এবং মুক্তিযোদ্ধা ও জনতা মিলে তাকে মেরে ফেলে। নিহত সেই রাজাকার দেলোয়ার শিকদারের পিতার নাম রসুল শিকদার। আর মাওলানা সাঈদীর পিতার নাম ইউসুফ সাঈদী; মাওলানা সাঈদীর ১৯৫৭ সালের দাখিল সনদেও তা লেখা রয়েছে। ১৯৫৭ সালের দাখিল সনদে মাওলানার নামও দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী মর্মে লেখা রয়েছে। কাজেই মাওলানা সাঈদী বরাবরই এ নামে পরিচিত এবং তার নাম কখনো দেলোয়ার শিকদার ছিল না।
ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের সবচেয়ে প্রবীণ ৮১ বছর বয়স্ক সাক্ষী মধুসূদন ঘরামীও জেরায় স্বীকার করেছেন, দেলোয়ার শিকদার নামে পিরোজপুরে একজন রাজাকার ছিল।
মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে ১৪ নম্বর অভিযোগ শেফালী ঘরামীকে ধর্ষণ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন তার স্বামী মধুসূদন ঘরামী। গতকাল আপিল বেঞ্চে এ অভিযোগ বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপনের সময় মধুসূদন ঘরামীর প্রসঙ্গ আসে।
গতকাল যুক্তি উপস্থাপনের শুরুতে অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান ট্রাইব্যুনালের রায় থেকে ১৪ নম্বর অভিযোগ পড়ে শোনান। এতে বলা হয়েছে, মাওলানা সাঈদীর নেতৃত্বে হোগলাবুনিয়া গ্রামে হিন্দুপাড়ায় আক্রমণ এবং এ সময় শেফালী ঘরামী নামে একজন মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়।
অ্যাডভোকেট শাহজাহান বলেন, রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, মাওলানা সাঈদী শেফালী ঘরামীকে ধর্ষণ করেননি। তখন আপিল বেঞ্চের একজন বিচারপতি প্রশ্ন করেন, সে সেখানে ছিল কি না। আরেকজন বিচারপতি বলেন, অভিযোগ হলোÑ আসামির নেতৃত্বে তারা সেখানে গেছে। এ সময় একজন বিচারপতি রায় থেকে একটি লাইন পড়ে শোনাতে বলেন অ্যাডভোকেট শাহজাহানকেÑ যেখানে লেখা রয়েছে, তার টিমের সদস্যরা ঘরে আগুন দিয়েছে। অ্যাডভোকেট শাহজাহান লাইনটি পড়ে শোনান।
এরপর অ্যাডভোকেট শাহজাহান বলেন, ১৪ নম্বর অভিযোগে মাওলানা সাঈদীকে দোষী সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল তার রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের ১, ২, ৩ এবং ২৩ নম্বর সাক্ষীর ওপর নির্ভর করেছে। কিন্তু সাক্ষ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায় রাষ্ট্রপক্ষের ১, ২ ও ৩ নম্বর সাক্ষী হোগলাবুনিয়া গ্রামে হিন্দুপাড়ায় আগুন দেয়া এবং শেফালী ঘরামীকে ধর্ষণ করা বিষয়ে একটি কথাও বলেননি।
অ্যাডভোকেট শাহজাহান বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের ২৩ নম্বর সাক্ষী মধুসূদন ঘরামী শেফালী ঘরামীর স্বামী এবং তিনি এ বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এরপর আইনজীবী মধুসূদন ঘরামীর জবানবন্দী এবং জেরা থেকে পড়ে শোনান আদালতে।
মধুসূদন ঘরামী তার জবানবন্দীতে বলেছেন, তার বড়ভাই নিকুঞ্জ ১৯৭০ সালের আগেই মারা গেছেন। যখন সেনাবাহিনী নামে এবং লুটপাট শুরু করে তার আগে মধুসূদন বিয়ে করেছেন। ফালগুন মাসে তিনি শেফালী ঘরামীকে বিয়ে করেছেন বলে জানান তার জবানবন্দীতে।
(মধূসূদন ঘরামী অসুস্থ হওয়ায় ট্রাইব্যুনালে সিকবেডে শুয়ে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন ২০১২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। অন্যান্য সাক্ষী যেভাবে নিজ থেকে ঘটনা বর্ণনা করেছেন তিনি সেভাবে বলেননি। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাকে ঘটনা বিষয়ে প্রশ্নের মাধ্যমে জবানবন্দী গ্রহণ করেছিলেন তখন।) 
মধুসুদনের বাড়িতে রাজাকার বাহিনীর সাথে আর কারা এসেছিল এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তার কাছ থেকে নির্দিষ্ট করে জানতে চাইলে তিনি জবাব দিয়েছিলেন ‘আমি বাড়িতে ছিলাম না তখন। কারা এসেছিল জানি না। আমার স্ত্রী পরে আমাকে বলেছেÑ তোমাকে যে মুসলমান বানিয়েছে সে এসেছিল। ’
আরেক প্রশ্নের জবাবে মধুসূদন ঘরামী বলেন, ‘আমার স্ত্রী আমাকে আরো বলেছে যে, তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। অসহ্য যন্ত্রণা। আমি আর বলতে পারছি না। আমার চিন্তা করো না। তুমি পালাও। ’
মধুসূদন ঘরামী তার জবানবন্দীতে আরো জানান, ‘আমাদের বাড়িতে লুটপাটের চার পাঁচ মাস পরে অগ্রহায়ণ মাসে আমার স্ত্রীর একটি কন্যাসন্তান হয়। তার নাম সন্ধ্যা। সন্তান হবার পর আমার স্ত্রীকে লোকজন গঞ্জনা করত। তখন আমি আমার শ্যালক কার্তিক শিকদারকে বললাম কী করবা? সে বলল, ভারতে নিয়ে যাই। তখন আমার স্ত্রী ভারতে চলে যায়। তারপর আর তার সাথে দেখা হয়নি। এর পর আমি আর বিয়ে করিনি।
মধুসূদনের জবানবন্দীর এ পর্যন্ত পড়ে শোনানোর পর জেরা থেকে পড়ে শোনান অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান। জেরা থেকে পড়ে শোনানোর শুরুতে তিনি বলেন, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী এবং দেলোয়ার শিকদার যে এক ব্যক্তি নন, বরং আলাদা, তা এ সাক্ষী স্বীকার করেছেন। তা ছাড়া তিনি সাক্ষ্য দেয়ার সময় ডকে মাওলানা সাঈদীকে চিহ্নিত করতে পারেননি। তিনি বলেন, সাঈদী এবং শিকদার নাম বিষয়ে পরে আলোচনা করা হবে। কিন্তু আজকে এ সাক্ষীর বরাতে এ বিষয়টি যতটুকু এসেছে তা তুলে ধরতে চাই।
তিনি উল্লেখ করেন যে, ট্রাইব্যুনালে জেরায় মধুসূদনকে প্রশ্ন করা হয় ‘সেকেন্দার শিকদার, দানেস মোল্লা, সৈয়দ মো: আফজাল, দেলোয়ার শিকদার পিতা রসুল শিকদার এরা রাজাকার বাহিনী গঠন করে’।
জবাবে মুধসূদন ঘরামী বলেন, ‘হ্যাঁ’।
জেরায় তাকে আবার প্রশ্ন করা হয়, ‘আপনার এলাকায় আরেকজন কুখ্যাত রাজাকার ছিল মোসলেম মাওলানা?
জবাবে মধুসূদন বলেন ‘হ্যাঁ’।
আরেকটি প্রশ্ন ছিল ‘রাজ্জাক রাজাকার, দেলোয়ার শিকদার পিতা রসুল শিকদার; এদের অত্যাচারের কারণে স্বাধীনতার পর মুক্তিযোদ্ধা এবং এলাকার লোকজন মিলে এদেরকে মেরে ফেলে।’
এর জবাবে সাক্ষী বলেন, পিরোজপুরে হতে পারে।
এ পর্যায়ে অ্যাডভোকেট শহজাহান বলেন, মাওলানা সাঈদীর পিতার নাম ইউসুফ সাঈদী। আর ট্রাইব্যুনালে জেরার সময় মধুসূদনকে সুস্পষ্টভাবে দেলোয়ার শিকদার পিতা রসুল শিকদার উল্লেখ করে প্রশ্ন করা হয়েছে যে, ১৯৭১ সালে অত্যাচারের কারণে দেলোয়ার শিকদারকে মুক্তিযোদ্ধা এবং এলাকার লোকজন মিলে মেরে ফেলেছে। জবাবে মধুসূদন বলেছেন, দেলোয়ার শিকদারকে পিরোজপুর মেরে ফেলা হতে পারে।
এরপর অ্যাডভোকেট শাহজাহান মধুসূদনের ট্রাইব্যুনালে জেরার নি¤েœর অংশ পড়ে শোনান আদালতে।
আইনজীবী : আপনার স্ত্রী তো কোনো মেম্বার, চেয়ারম্যান, রাজাকার বা পিস কিমিটির লোকদের চিনতেন না।
সাক্ষী : না।
আইনজীবী : দেলোয়ার পরে নিজেকে শিকদার পরিচয় দিত। আগে শুনিনি এখন শুনছি সাঈদীÑ এ কথাগুলো আপনি ট্রাইব্যুনালে বলেছেন কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তার কাছে প্রদত্ত জবানবন্দীতে বলেননি।
সাক্ষী : নাও বলতে পারি।
আইনজীবী : স্ত্রী বলে, তোমাকে যে মুসলমান বানায় সে এসেছিল, তুমি পালাও। এ কথাও আপনি বলেননি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে।
সাক্ষী : স্মরণ নেই।
আইনজীবী : বাজারে মসজিদে বসে মুসলমান বানায় সে কথাও বলেননি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে।
সাক্ষী : মনে নেই।
আইনজীবী : আপনার নাম আলী আশরাফ আর কৃষ্ণ বাবুর নাম আলী আকবার রাখা হয় সে কথাও বলেননি।
সাক্ষী : স্মরণ নেই।
আইনজীবী : কাশেম আলী হাওলাদার ওরফে কাশেম মাস্টার আপনার একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলে যায় এবং সাত মাস জেল খাটে।
সাক্ষী : হ্যাঁ।
আইনজীবী : কাশেম মাস্টার আপনার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে সে অভিযোগ আপনি করেন এবং সে কারণে সে জেলে যায়।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : আপনার স্ত্রী শেফালী ঘরামী ভারতে চলে গেছে আপনার সাথে বিরোধের কারণে।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : ২০১০ সালের পর থেকে আপনি এবং আপনার বৌদি বয়স্কভাতা পান।
সাক্ষী : হ্যাঁ।
আইনজীবী : আপনারা দুজন একান্নে/একপাকে খান।
সাক্ষী : হ্যাঁ।
আইনজীবী : সাক্ষী দেয়ার জন্য কত দিন আগে ঢাকায় আসলেন?
সাক্ষী : ১৮-২০ দিন আগে অনুমান।
আইনজীবী : আপনি সুস্থ অবস্থায় ঢাকায় আসেন। এই মামলায় মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার জন্য চাপে পড়ে আপনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সাক্ষী : প্রায় সুস্থ অবস্থায় ঢাকায় আসি। পরে অসুস্থ হই।
গতকাল যুক্তি উপস্থাপনের শুরুতে অ্যাডভোকেট শাহজাহান বলেন, আমি জ্বরে আক্রান্ত। শুনানিতে অংশ নিতে কষ্ট হচ্ছে। শুনানি মুলতবি করলে ভালো হয়। কিন্তু প্রধান বিচারপতি বলেন, শুরু করেন। তারপর দেখব। এরপর বিরতি পর্যন্ত যুক্তি উপস্থাপনের পর অ্যাডভোকেট শাহজাহান বলেন, আগামী রোববার আবার বলতে চাই। আজ মুলতবি করা হোক। আদালত তখন আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ আপিল শুনানির কার্যক্রম মুলতবি ঘোষণা করেন।
গতকালের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান। মাওলানা সাঈদীর পক্ষে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিতি ছিলেন গিয়াসউদ্দিন মিঠু, তারিকুল ইসলাম, আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ।


Thursday, February 13, 2014

ভ্যালেন্টাইন ডে নয়, এটি বিশ্ব বেহায়া দিবস ।

বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩৬৪ দিন মানুষকে ধোঁকায় ফেলে শয়তান যতটা না বিজয়ী হয়, তার চেয়ে শয়তান বেশি বিজয়ী হয় কালকের ১ টা দিনে।

সেই দিনটার কথা আপনাদের কারো অজানা নয়, 'বিশ্ব ভালোবাসা দিবস' নামে যে দিবস সারা পৃথিবীতে পরিচিত। এটা এমন একটা দিন, যে দিনে কিছু যুবক-যুবতী এমন সব অনাচার-অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়, যার কারণে পুরো ...পৃথিবীটাই একটি অসভ্য ভুমিতে পরিণত হয়।

বিভিন্ন পার্ক, অন্ধকার রেস্টুরেন্টের ছোট্ট কেবিন গুলো একেকটা যেন 'আইয়্যামে জাহেলিয়াতের' বেশ্যাখানায় পরিণত হয়। বাবা-মায়ের আদরের ছেলেটি অন্য কোনো ভাইয়ের লক্ষী বোনকে নিয়ে এমন বেহেল্লাপনায় মেতে উঠে।

যা একটি সভ্য দেশ কখনো মেনে নিতে পারে না, কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আমরা নিজেদেরকে 'মুসলিম' বলে দাবী করি, কিন্তু ঐটা একটা নামকাওয়াস্তে লেবাস মাত্র।

পৃথিবীর প্রায় সব মুসলিম নামধারী দেশগুলোতে 'ভালোবাসা দিবসের' নাম দিয়ে তরুন-তরুনীরা ব্যাভিচারে মেতে উঠে।

এ ক্ষেত্রে সরকার গুলো যেন নিরব। সরকারের যেনো এখানে কিছুই করার নেই!!! অথচ এই তরুন- তরুনীরাই আগামীদিনের মন্ত্রী, এমপি বা রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল কেউ হবে। আমার তো ভাবতেই কেমন যেন ঘেন্না ঘেন্না লাগছে, আমার এলাকার এমপি হবে বা আমার দেশের কেবিনেট মন্ত্রী হবে তরুন বয়সে যিনা-ব্যাভিচারে লিপ্ত ছিলো এমন কোনো ব্যাক্তি???

এর চেয়ে মূর্খ কোনো সৎ ব্যাক্তিকেও আমি মেনে নিতে রাজী আছি। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, এটি এমন একটি দিবস, যে দিনে কিছু মেয়ে পতিতা হবে, কিছু মেয়ে প্রতারিত হবে, কিছু ছেলে খারাপ কাজে জড়িত হবে।

আপনার পরিবার যে আক্রান্ত হবে না, তার কি কোনো গ্যারান্টি আছে???

আপনারা হয়তো জানেন, এই বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে সারা পৃথিবীতে প্রতিবছর প্রায় ৯০,২৪০ জন নারী তাদের গর্ভপাত করে।

কি লির্লজ্জতা???

এটা কি আইয়্যামে জাহেলিয়াত নয়???

তাই এই দিনটিকে কোনো মতেই বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বলা যাবে না, ১৪ ই ফেব্রুয়ারী দিবসের নাম হবে ''বিশ্ব বেহায়া দিবস''।

এই দিবসের সঙ্গে কোনো মুসলিমের সম্পর্ক থাকতে পারে না। কারন মুসলিমদের প্রতিটি দিনই ভালোবাসার।

''আদ্দিনু ওয়ান্ নাসিহা'' ''দ্বীন মানেই হলো কল্যাণ কামনা (ভালোবাসা, উপকার...)'', সুবহানাল্লাহ। ক্বুরআনের প্রত্যেকটি পাতায় পাতায় কেবল ভালোবাসার কথা।

মা-বাবাকে কিভাবে ভালবাসতে হবে, আত্মীয়- স্বজনকে কিভাবে ভালোবাসতে হবে, স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে কিভাবে ভালোবাসতে হবে, প্রতিবেশী, মুসলিম-অমুসলিম বন্ধু-বান্ধব সহ এমনকি মাতা-পিতার বন্ধুদের সাথে কি আচরণ করতে হবে, সব খুলে খুলে আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলা তার নিয়ম শুদ্ধ আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন।

সুতরাং ধিক্কার জানাই এই বিশ্ব বেহায়া দিবসকে। এটা মুসলমানের কোনো প্রয়োজন নাই, এটা প্রয়োজন ঐ দেশে, যে দেশের জীবনে, পরিবারে, সমাজে কোনো ভালোবাসা নাই।

যে দেশের ছেলে- মেয়েরা ১৮ বছর পার হলেই মা- বাবাকে ছেড়ে গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে লিভ-টুগেদার করে, সেই দেশের জন্য ভালোবাসা দিবসের প্রয়োজন থাকতে পারে।

আমাদের মতো শান্তির দেশ, ভালোবাসার দেশে 'ভালোবাসা দিবসের' মতো 'বেহায়া দিবসের' কোনো প্রয়োজন নাই।

অতএব ধিক্কার জানাই ঐ সকল তরুন-তরুনীদের যারা লাল গোলাপ নিয়ে প্রেমিক/প্রেমিকার সাথে ১৪ ই ফেব্রুয়ারী যিনা-ব্যাভিচারে মত্ত হবে।

ধিক্কার জানাই ঐ সব বুদ্ধিজীবি, লেখক, সাহিত্যিকদের, যারা ১৪ ই ফেব্রুয়ারী দিনকে পূঁজি করে তরুন-তরুনীদেরকে অশ্লীলতার দিকে ধাবিত করে।

আল্লাহ বলেন,
''সেই ব্যাক্তির চেয়ে আর কার কথা উত্তম হবে যে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকলো, সৎ কাজ করলো, আর বললো আমি মুসলমান''।

অতএব মুসলমান হয়েও যারা ইসলামী সংস্কৃতিকে বাদ
দিয়ে Western Culture গ্রহন করে নিয়েছে, তোমরা প্রস্তুত থাকো কবর তোমাদেরকে হাতছানী দিয়ে ডাকছে।

আল্লাহ আমাদের বিশ্ব বেহায়া দিবস নামক আল্লাহর গজব থেকে রক্ষা করুন।
ভ্যালেন্টাইন ডে নয়, এটি বিশ্ব বেহায়া দিবস । বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩৬৪ দিন মানুষকে ধোঁকায় ফেলে শয়তান যতটা না বিজয়ী হয়, তার চেয়ে শয়তান বেশি বিজয়ী হয় কালকের ১ টা দিনে। সেই দিনটার কথা আপনাদের কারো অজানা নয়, 'বিশ্ব ভালোবাসা দিবস' নামে যে দিবস সারা পৃথিবীতে পরিচিত। এটা এমন একটা দিন, যে দিনে কিছু যুবক-যুবতী এমন সব অনাচার-অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়, যার কারণে পুরো ...পৃথিবীটাই একটি অসভ্য ভুমিতে পরিণত হয়। বিভিন্ন পার্ক, অন্ধকার রেস্টুরেন্টের ছোট্ট কেবিন গুলো একেকটা যেন 'আইয়্যামে জাহেলিয়াতের' বেশ্যাখানায় পরিণত হয়। বাবা-মায়ের আদরের ছেলেটি অন্য কোনো ভাইয়ের লক্ষী বোনকে নিয়ে এমন বেহেল্লাপনায় মেতে উঠে। যা একটি সভ্য দেশ কখনো মেনে নিতে পারে না, কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আমরা নিজেদেরকে 'মুসলিম' বলে দাবী করি, কিন্তু ঐটা একটা নামকাওয়াস্তে লেবাস মাত্র। পৃথিবীর প্রায় সব মুসলিম নামধারী দেশগুলোতে 'ভালোবাসা দিবসের' নাম দিয়ে তরুন-তরুনীরা ব্যাভিচারে মেতে উঠে। এ ক্ষেত্রে সরকার গুলো যেন নিরব। সরকারের যেনো এখানে কিছুই করার নেই!!! অথচ এই তরুন- তরুনীরাই আগামীদিনের মন্ত্রী, এমপি বা রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল কেউ হবে। আমার তো ভাবতেই কেমন যেন ঘেন্না ঘেন্না লাগছে, আমার এলাকার এমপি হবে বা আমার দেশের কেবিনেট মন্ত্রী হবে তরুন বয়সে যিনা-ব্যাভিচারে লিপ্ত ছিলো এমন কোনো ব্যাক্তি??? এর চেয়ে মূর্খ কোনো সৎ ব্যাক্তিকেও আমি মেনে নিতে রাজী আছি। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, এটি এমন একটি দিবস, যে দিনে কিছু মেয়ে পতিতা হবে, কিছু মেয়ে প্রতারিত হবে, কিছু ছেলে খারাপ কাজে জড়িত হবে। আপনার পরিবার যে আক্রান্ত হবে না, তার কি কোনো গ্যারান্টি আছে??? আপনারা হয়তো জানেন, এই বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে সারা পৃথিবীতে প্রতিবছর প্রায় ৯০,২৪০ জন নারী তাদের গর্ভপাত করে। কি লির্লজ্জতা??? এটা কি আইয়্যামে জাহেলিয়াত নয়??? তাই এই দিনটিকে কোনো মতেই বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বলা যাবে না, ১৪ ই ফেব্রুয়ারী দিবসের নাম হবে ''বিশ্ব বেহায়া দিবস''। ''আদ্দিনু ওয়ান্ নাসিহা'' ''দ্বীন মানেই হলো কল্যাণ কামনা (ভালোবাসা, উপকার...)'', সুবহানাল্লাহ। ক্বুরআনের প্রত্যেকটি পাতায় পাতায় কেবল ভালোবাসার কথা। মা-বাবাকে কিভাবে ভালবাসতে হবে, আত্মীয়- স্বজনকে কিভাবে ভালোবাসতে হবে, স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে কিভাবে ভালোবাসতে হবে, প্রতিবেশী, মুসলিম-অমুসলিম বন্ধু-বান্ধব সহ এমনকি মাতা-পিতার বন্ধুদের সাথে কি আচরণ করতে হবে, সব খুলে খুলে আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলা তার নিয়ম শুদ্ধ আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন। সুতরাং ধিক্কার জানাই এই বিশ্ব বেহায়া দিবসকে। এটা মুসলমানের কোনো প্রয়োজন নাই, এটা প্রয়োজন ঐ দেশে, যে দেশের জীবনে, পরিবারে, সমাজে কোনো ভালোবাসা নাই। যে দেশের ছেলে- মেয়েরা ১৮ বছর পার হলেই মা- বাবাকে ছেড়ে গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে লিভ-টুগেদার করে, সেই দেশের জন্য ভালোবাসা দিবসের প্রয়োজন থাকতে পারে। আমাদের মতো শান্তির দেশ, ভালোবাসার দেশে 'ভালোবাসা দিবসের' মতো 'বেহায়া দিবসের' কোনো প্রয়োজন নাই। অতএব ধিক্কার জানাই ঐ সকল তরুন-তরুনীদের যারা লাল গোলাপ নিয়ে প্রেমিক/প্রেমিকার সাথে ১৪ ই ফেব্রুয়ারী যিনা-ব্যাভিচারে মত্ত হবে। ধিক্কার জানাই ঐ সব বুদ্ধিজীবি, লেখক, সাহিত্যিকদের, যারা ১৪ ই ফেব্রুয়ারী দিনকে পূঁজি করে তরুন-তরুনীদেরকে অশ্লীলতার দিকে ধাবিত করে। আল্লাহ বলেন, ''সেই ব্যাক্তির চেয়ে আর কার কথা উত্তম হবে যে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকলো, সৎ কাজ করলো, আর বললো আমি মুসলমান''। Western Culture গ্রহন করে নিয়েছে, তোমরা প্রস্তুত থাকো কবর তোমাদেরকে হাতছানী দিয়ে ডাকছে। আল্লাহ আমাদের বিশ্ব বেহায়া দিবস নামক আল্লাহর গজব থেকে রক্ষা করুন।

যিনা কি?



রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
“কোন বেগানা নারীর প্রতি দৃষ্টি দেওয়া চোখের যিনা, অশ্লীল কথাবার্তা বলা জিহ্বার যিনা, অবৈধভাবে কাউকে স্পর্শ করা হাতের যিনা, ব্যাভিচারের উদ্দেশ্যে হেঁটে যাওয়া পায়ের যিনা, খারাপ কথা শোনা কানের যিনা আর যিনার কল্পণা করা ও আকাংখা করা মনের যিনা। অতঃপর লজ্জাস্থান একে পূর্ণতা দেয় অথবা অসম্পূর্ণ রেখে দেয়”।
সহীহ আল-বুখারী, সহীহ আল-মুসলিম, সুনানে আবু দাউদ, সুনানে আন-নাসায়ী।

যিনা হারামঃ
আল্লাহ তাআ’লা যিনাকে হারাম ঘোষণা করে বলেনঃ 
“তোমরা যিনার কাছেও যাবে না। কেননা তা অত্যন্ত নির্লজ্জ এবং খারাপ কাজ"।
সূরা বনী ইসরাঈলঃ ৩২।

যিনার শাস্তিঃ
রাসুল ﷺ বলেছেনঃ “আমি স্বপ্নে একটি চুলা দেখতে পেলাম যার উপরের অংশ ছিল চাপা আর নিচের অংশ ছিল প্রশস্ত আর সেখানে আগুন উত্তপ্ত হচ্ছিল, ভিতরে নারী পুরুষরা চিল্লাচিল্লি করছিল। আগুনের শিখা উপরে আসলে তারা উপরে উঠছে, আবার আগুন স্তিমিত হলে তারা নিচে যাচ্ছিল, সর্বদা তাদের এ অবস্থা চলছিল, আমি জিবরীল আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলামঃ এরা কারা? জিবরীল আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললঃ তারা হল, অবৈধ যৌনচারকারী নারী ও পুরুষ। 
সহীহ আল-বুখারী।