Friday, August 15, 2014

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ-ভারতসহ এশিয়ার অনেক দেশেই পানির সংকট দেখা দিতে পারে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তিব্বতে হিমবাহের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে চলছে। ফলে বাংলাদেশ-ভারতসহ এশিয়ার অনেক দেশেই পানির সংকট দেখা দিতে পারে। বড় নদ-নদীতে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ও বাঁধ নির্মাণ বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলছে।

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন যে বেড়ে চলেছে, তা জানার জন্য আর বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রয়োজন হচ্ছে না। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ প্রতি বছর তা অল্প অল্প করে অনুভব করছেন। তবে এর সামগ্রিক প্রবণতা ও প্রভাব সম্পর্কে এখনো অনেক কিছু জানা বাকি রয়েছে।

চীনের এক গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবার এমনই এক চাঞ্চল্যকর প্রবণতার খবর প্রকাশ করেছে। চীনা বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির ‘ইনস্টটিটিউট অফ টিবেটান প্ল্যাটো রিসার্চ’-এর সূত্র অনুযায়ী, তিব্বতের মালভূমির হিমবাহের তাপমাত্রা গত ৫০ বছরে আশঙ্কাজনক মাত্রায় বেড়ে গেছে– যা গোটা বিশ্বের গড় হারের প্রায় দ্বিগুণ! গত দুই হাজার বছরে এমন অঘটন দেখা যায়নি।
এই প্রবণতা চালু থাকলে বরফ আরো দ্রুত গলে যাবে, সেই জায়গায় মরু অঞ্চল সৃষ্টি হবে। তিব্বতের হিমবাহ ধীরে ধীরে উধাও হয়ে গেলে বাংলাদেশ ও ভারতসহ এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পানির সরবরাহ মারাত্মক হারে কমে যাবে।

বাংলাদেশে ও ভারতের ব্রহ্মপুত্র বা যমুনা, চীনের ইয়েলো ও ইয়াংসি নদী, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মেকং ও সালউইনের মতো গুরুত্বপূর্ণ নদ-নদীর পানির সরবরাহ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
চীনা গবেষকদের খুঁটিনাটি কিছু হিসেব পরিস্থিতির ভয়াবহতা স্পষ্ট করে দিচ্ছে। মে মাসের হিসেব অনুযায়ী গত ৩০ বছরে তিব্বতের হিমবাহ প্রায় ১৫ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে৷ অর্থাৎ প্রায় ৮,০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা থেকে হিমবাহ উধাও হয়ে গেছে।

এখন প্রশ্ন হলো, এমন প্রবণতা বন্ধ করা হয়ত আর সম্ভব না হলেও এর গতি কি কমানো সম্ভব? কারণ এমন অস্বাভাবিক মাত্রায় জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য মানুষের কার্যকলাপ দায়ী।
বিজ্ঞানীরা সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর প্রতি ঠিক সেই আবেদনই জানিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে চীন ও ভারতের মতো দেশ উল্টো পথে হাঁটছে। চীনের সরকার তিব্বত অঞ্চলেই একের পর এক জলবায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী ২০২০ সালে আরও বড় আকারের বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার কথা।

জীবাশ্ম-ভিত্তিক জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমাতে চীন গত কয়েক দশক ধরে জলবিদ্যুতের ওপর বিশেষ জোর দিয়ে আসছে। ভারতও ব্রহ্মপুত্র নদে বেশ কয়েকটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। এই মর্মে প্রায় ১০০টি প্রস্তাব পরীক্ষা করা হচ্ছে।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে।
আরটিএনএন

কমলাপুর স্টেশনে ৭০০ ইয়াবাসহ নারী আটক

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সাতশ ইয়াবাসহ এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম মেইল ট্রেন থেকে নামার পর তাকে আটক করা হয়।

কমলাপুর রেলওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদ পাওয়ার পর তাকে শৌচাগারে নিয়ে নারী পুলিশ দিয়ে তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিতে তার গোপনাঙ্গের ভেতরে একটি কনডমে সাতশ ইয়াবা পাওয়া গেছে। এটি স্কচটেপ দিয়ে বিশেষভাবে আটকানো ছিলো।

আটককৃত নারী (২৮) চট্টগ্রামে একটি পোশাক কারখানায় চাকরে করেন বলে জানা গেছে। তার এক সহকর্মী ইয়াবা ট্যাবলেট বহন করে কমলাপুর এনে এক ব্যক্তিকে দিতে বলেন।

আজ শুক্রবার আকটকৃত নারীকে কমলাপুর রেলওয়ে থানায় মামলা করার পর আদালতে হাজির করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়।
নয়া দিগন্ত অনলাইন

Tuesday, August 12, 2014

প্রাণঘাতী ইবোলা সম্পর্কে জেনে নিন

পশ্চিম আফ্রিকায় মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে ইবোলা ভাইরাস। ইতোমধ্যে বহু লোক মারা গেছেন ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে। শুধু আফ্রিকাবাসীই নন, বিশ্বব্যাপী ইবোলা ভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

ইবোলা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। পশ্চিম আফ্রিকায় বিভিন্ন শান্তি মিশনে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সদস্যরাসহ বিভিন্ন বাহিনীর শান্তিরক্ষীরা কর্মরত রয়েছেন। যাদের মাধ্যমে বংলাদেশেও চলে আসতে পারে এই ভাইরাস।

প্রাণঘাতী ইবোলা ভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশেও সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যেই ৯০ দিনের বিশেষ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, স্থল ও নৌবন্দরে চিকিৎসক দল ভাইরাস আক্রান্ত মানুষদের শনাক্তে কাজ করবে।

এছাড়াও চিকিৎসক দলের কার্যক্রম সমন্বয় ও তদারকি করবে স্বাস্থ্য সচিবের নেতৃত্বে গঠিত অ্যাকশন কমিটি। এ দলে স্বাস্থ্য অধিদফতর, আইইডিসিআর, ইমিগ্রেশনসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রতিনিধি থাকবেন বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

তবে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস যেন বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জনসচেতনতা। এ কারণে বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য ইবোলা ভাইরাস সংক্রান্ত কিছু জরুরি তথ্য তুলে দেওয়া হলো।

ইবোলা কী?
ইবোলা ভাইরাস আগে রক্তপ্রদাহজনিত জ্বর [Ebola hemorrhagic fever (EHF)] হিসেবেই সমধিক পরিচিত ছিল। ইবোলা মূলত একটি আরএনএ ভাইরাস। যেটির নামকরণ করা হয়েছে কঙ্গোর ইবোলা নদীর নাম থেকে। ইবোলা ভাইরাস গোত্রের ৫টির মধ্যে ৩টি প্রজাতি মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয়ে গুরুতর অসুস্থ করার ক্ষমতা রাখে! বাকি ২টি মানুষের জন্য তেমন ক্ষতিকর নয়। এদের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হচ্ছে জাইরে (Zaire) ইবোলা ভাইরাস (জাইরে হলো একটি জায়গার নাম যেখানে সর্বপ্রথম এই ভাইরাসে কোনো মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলো)। প্রথমবার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার ছিল শতকরা ৯০ শতাংশ! ভয়াবহ এই ভাইরাসটি মানবদেহে রক্তপাত ঘটায়। লিভার, কিডনিকে অকেজো করে দেয়, রক্তচাপ কমিয়ে দেয়, হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন কমিয়ে দেয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যাহত করে।
ebola_bg
ইবোলা ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশের পর কয়েকদিন থেকে প্রায় ৩ সপ্তাহ কোনো লক্ষণ প্রকাশ না করেই অবস্থান করতে পারে। অর্থাৎ এর লক্ষণসমূহ পরিলক্ষিত হওয়ার জন্য সর্বোচ্চ ২১দিন লাগতে পারে। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি এই রোগ নিয়ে চলে যেতে পারেন এক দেশ থেকে অন্য দেশে। আর সেখানে ছড়িয়ে দিতে পারেন নিজের অজান্তেই।

ইবোলার লক্ষণ
ইবোলা আক্রান্ত ব্যক্তি প্রথমে নিরীহ ফ্লু’র মতো হালকা জ্বর, মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা অনুভব করে। কিছুদিন পর তীব্র মাথা ব্যথা, জ্বর, শরীর ব্যথা, ত্বকে দানা দানা উঠা, মুখে ঘা, ডায়রিয়া এবং মারাত্মক বমি শুরু হতে পারে। চূড়ান্ত পর্যায়ে শরীরের ভিতরে বাইরে রক্তপাত শুরু হতে পারে। এই ভাইরাসটি আক্রান্ত ব্যক্তির লিভার, কিডনি, হৃদপিন্ড অকেজো করে দেয়, যার ফলে রোগীর মৃত্যু ঘটে।

এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো সাধারণ ফ্লু’র মতোই। সর্দি কাশি, মাথা ব্যথা, বমি, ডায়েরিয়া এবং জ্বর এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গ। তাই কারো উপরোক্ত কোনো উপসর্গ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে! রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে যে এটা ম্যালেরিয়া, হ্যাপাটাইটিস, কলেরা বা অন্য কোনো রোগের জীবাণুর কারণে হচ্ছে কিনা!

কিভাবে ছড়ায়?
বলা হয়ে থাকে বাদুরের খাওয়া ফল থেকেই ইবোলা ভাইরাস মানুষের দেহে প্রথম প্রবেশ করে এবং পরবর্তীতে তা মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে শুরু করে। ইবোলা আক্রান্ত মানুষের দেহরস অপর কোনো মানুষের দেহের স্পর্শে আসলে সেই ব্যক্তিও আক্রান্ত হতে পারেন। এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুর পরও ভাইরাসটি বেশ কয়েকদিন টিকে থাকে।

আশার কথা হলো, রোগটি ফ্লু ও অন্যান্য বায়ুবাহিত রোগের মতো ছড়ায় না, আক্রান্ত ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শে না আসলে এই রোগে সংক্রমিত হবার ভয় নেই।

চিকিৎসা
রিহাইড্রেশন এবং হালকা বেদনানাশক দিয়ে করা হচ্ছে ইবোলা আক্রান্তের চিকিৎসা। খুব একটা কার্যকরী কোনো প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। নেই কোনো প্রতিষেধক টিকাও। তথ্য মতে এই রোগে মৃত্যুর হার ৫০%-৯০%।

সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে এই রোগের লক্ষণগুলো অন্য আরও অনেকগুলো রোগের লক্ষণের সাথে মিলে যায়! ফলে রোগ শনাক্ত করতে সময় লেগে যায়!

তাই সঠিক রোগ শনাক্ত করা এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়াটাও অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ! তবে যদি রোগ দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করা যায় এবং সঠিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া যায় তাহলে রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়!

** ইবোলা ভাইরাস ঠেকাতে বন্দরে বন্দরে প্রতিরোধ


Saturday, August 9, 2014

সাংবাদিকদের 'খবিশ', 'চরিত্রহীন' ও 'লম্পট' বললেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী

আদিবাসী দিবস উপলক্ষে সিলেটে একটি আলোচনা সভায় সাংবাদিকদের 'খবিশ' 'চরিত্রহীন' 'লম্পট' মন্তব্য করেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী। এ ছাড়া তিনি নারী-পুরুষের উপস্থিতিতে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তিনি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেন এবং অকথ্য ভাষা ব্যবহার করেন।
বিকেলে নগরের সুরমা পয়েন্টস্থ জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি ছিলেন সাংবাদিকদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন। মঞ্চে ওঠেই তিনি মাইক নিয়ে সাংবাদিকদের অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগের নির্দেশ দেন। কিন্তু পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকরা সেখানে থেকে গেলে সমাজকল্যাণমন্ত্রী সেখানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের নানাভাবে ভর্ৎসনা করেন। সিলেট বিভাগীয় আদিবাসী উদযাপন কমিটির এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
একপর্যায়ে তিনি 'খবিশ' ও 'চরিত্রহীন' বলে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করলে উপস্থিত সাংবাদিকরা অনুষ্ঠান বয়কট করেন। এ সময় মিলনায়তনে হট্টগোল শুরু হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে মন্ত্রী বক্তৃতা শেষ করতে গিয়েও সাংবাদিকবিহীন মিলনায়তনে আবারও সাংবাদিকদের আক্রমণ করে বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে সিলেটের সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সাংসদ শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ বিশেষ অতিথি ছিলেন। বিশেষ অতিথিদের বক্তৃতা পর্ব শেষে ৬টার দিকে সমাজকল্যাণমন্ত্রী বক্তৃতা শুরু করেন। বিষয় বস্তু আদিবাসী নিয়ে হলেও প্রায় ৪০ মিনিট বক্তৃতায় তিনি ঘুরে ফিরে সাংবাদিকদের নানা রকম অশ্লীল শব্দ প্রয়োগে আক্রমণাত্মক বক্তৃতা দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বক্তৃতা দেওয়ার জন্য তাঁকে আহ্বান করা মাত্র তিনি মাইক্রোফোনের সামনে এসে সাংবাদিকদের সরে যেতে বলেন। এ সময় তিনি 'সর সর...' বলেন। একপর্যায়ে 'তোমাদের মুখ দেখতে আসি নাই...' বলে সাংবাদিকদের মাইক্রোফোনের সামনে থেকে ক্যামেরা নিয়ে চলে যেতে বলেন।
সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন- 'সাংবাদিকদের ঠিক করতে নীতিমালা হয়েছে। ওই দিন কেবিনেট মিটিংয়ে আমি থাকলে সাংবাদিকদের .... (অকথ্য শব্দ) দিয়ে বাঁশ ঢুকাতাম। সাংবাদিকদের এখন এমনভাবে ঠিক করা হবে যাতে নিজের স্ত্রীকে পাশে নিয়েও শান্তিতে ঘুমাতে পারবে না। সাংবাদিকরা বদমাইশ, চরিত্রহীন, লম্পট।'
মন্ত্রিত্বর পরোয়া করেন না এমন দম্ভোক্তি করে মহসিন আলী বলেন 'মন্ত্রিত্ব থাকলেই কী, আর না থাকলে কী? জনগণ আমাকে ভালোবাসে, আমিও জনগণের ভালোবাসা নিয়ে বাঁচতে চাই।'
সাংবাদিকরা অল্পশিক্ষিত উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন 'আমার মেয়ে সাংবাদিকতায় মাস্টার্স। আর যারা পত্রিকায় আমার বিরুদ্ধে লেখালেখি করে তারা দু-এক কলম পড়ালেখা করেছে। আমি বলি একটা, তারা লিখে আরেকটা। দুই টাকা খেয়ে তারা আমার ... (অকথ্য শব্দ) দিয়ে বাঁশ ঢুকাতে চায়। আমার শ্বশুরবাড়ি সিলেটে। সাংবাদিকদের পেছনে সিলেটের মানুষ লেলিয়ে দিতে আমার সময় লাগবে না। সাংবাদিকরা আমার ... (অকথ্য শব্দ) ছিঁড়তে পারবে না।'
মন্ত্রী বক্তৃতার একপর্যায়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রতি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে 'খবিশ' ও 'চরিত্রহীন' বলে ভর্ৎসনা করেন। তিনি বলেন, 'এরা সবটা খবিশ, চরিত্রহীন! স্বাধীন কমিশন হলে পরে দেখ নেব- তোমরা (সাংবাদিকরা) কতটুকু যেতে পার!'
সমাজকল্যাণমন্ত্রী যখন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছিলেন, পেছনে অনেকটা বিব্রত ভাব নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মন্ত্রীর এপিএস সাইফুল ইসলাম খান। অনুষ্ঠান শেষে জানতে চাইলে মন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'মন্ত্রীর বক্তৃতাকে বিকৃত করে এর আগে কয়েকটি পত্রিকা রিপোর্ট করায় মন্ত্রী ক্ষুব্ধ ছিলেন। সাংবাদিকরা সামনে এটা দেখে সেই ক্ষোভে মন্ত্রী কিছু কথা বলে ফেলেছেন। বিষয়টি আসলেই দুঃখজনক!'
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সরকারের এক তথ্যবিবরণীতে বলা হয়, দেশে কোনো আধিবাসী নেই। যে আলোচনা সভা, টকশো কিংবা অন্য কোনো অনুষ্ঠানে 'আধিবাসী' শব্দ ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু সরকারের একজন মন্ত্রী হয়ে মহসীন আলী 'আধিবাসী' অনুষ্ঠানে গিয়ে সাংবাদিকদের ভর্ৎসনা করলেন।

Friday, August 8, 2014

যে কারণে ভেঙে গেল হামাস-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি


৮ আগস্ট (রেডিও তেহরান): মিশরের মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত ফিলিস্তিন ও ইহুদিবাদী ইসরাইলের মধ্যকার পরোক্ষ আলোচনা কোনো সফলতা ছাড়াই শেষ হয়েছে। ইসরাইল যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে আগ্রহী ছিল কিন্তু হামাসের প্রতিনিধিরা শর্ত না মানলে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে রাজি হন নি।



ইসরাইলের অবস্থানে আপাতত মনে হচ্ছে তারা আন্তরিকভাবে যুদ্ধবিরতি চেয়েছে কিন্তু আসল ঘটনা সম্পূর্ণ ভিন্ন।



হামাস যুদ্ধ বিরতির জন্য তিনটি প্রধান শর্ত দিয়েছিল। সেগুলো হচ্ছে- গাজার ওপর থেকে সাত বছরের অবরোধ সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করতে হবে, ইসরাইলের কারাগারে বন্দী ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দিতে হবে এবং গাজার ওপর আগামী ১০ বছর কোনো হামলা করা যাবে না। এর সঙ্গে হামাসের দাবি ছিল গাজার বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দর চালু করার সুযোগ দিতে হবে। কিন্তু এর একটি দাবিও মানে নি ইসরাইল। সে কারণে হামাসের পক্ষে স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যাওয়া সম্ভব হয় নি। ফলে শুক্রবার সকাল ৮টার পরপরই পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আবার রকেট হামলা শুরু করে হামাস। ইসরাইলও বিমান ও ট্যাংক হামলা শুরু করেছে।



হামাসের দাবির যৌক্তিকতা ছিল যৌক্তিক ও সার্বজনীন। কারণ এখনই যদি ইসরাইল গাজার ওপর থেকে অবরোধ প্রত্যাহার না করে তাহলে ভবিষ্যতেও করবে না। আর অবরোধ প্রত্যাহার না হলে গাজার জনজীবনকে স্বাভাবিক করা অসম্ভব। সমুদ্রবন্দর এবং বিমানবন্দরও চালু করা সম্ভব নয়। অন্যদিকে, সমুদ্রে তেল-গ্যাস ও মৎস্য সম্পদ আহরণের মতো কার্যক্রমও চালানো যাবে না। সে ক্ষেত্রে হামাসের সামনে তাদের দাবি মানার কোনো বিকল্প নেই। অবরোধ তুলে নেয়ার বিষয়ে হামাসের দাবিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও সমর্থন করেছেন।



অন্যদিকে, ইসরাইল অযৌক্তিক শর্ত দিয়েছে যে, হামাসকে নিরস্ত্র করতে হবে। এখানে প্রশ্ন উঠেছে, যে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ করছে সেই হামাসকে নিরস্ত্র করার দাবি কতটা যৌক্তিক। মূলত হামাসের যৌক্তিক দাবি না মানা এবং ইসরাইলের অযৌক্তিক দাবি আদায়ে অনড় অবস্থান গ্রহণের কারণেই যুদ্ধবিরতি ভেঙে গেছে। নতুন করে গাজার ওপর বিমান হামলার মাধ্যমে তাদের সফলতার দাবিও প্রশ্নের মুখে পড়েছে।#



রেডিও তেহরান/এসআই/৮