# মেয়েকে তার মতের বিরুদ্ধে জোর করে বিয়ে দেওয়া ইসলামে জায়েজ নেই।
# বাবা অথবা বাবা না থাকলে চাচা/দাদা বা এইরকম "ওয়ালী" বা লিগ্যাল পুরুষ গার্জিয়ান ছাড়া কোনো মেয়ে একা একা বিয়ে করতে পারেনা বা কোনো মেয়ে অন্য মেয়ের বিয়ে দিতেও পারেনা।
নারীদের জন্য গার্জিয়ান ছাড়া বিয়ে হবেনা + নারীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদেরকে জোর করে বিয়ে দেওয়া যাবেনাঃ
প্রেমের আবেগে গা ভাসিয়ে দিয়ে অনেক নারী ঘর থেকে পালিয়ে বা অভিভাবককে না জানিয় গোপনে প্রেমিককে বিয়ে করে। অথচ এই কাজটা সম্পূর্ণ হারাম! এইভাবে নারীর বিয়ে বৈধ নয়, অর্থাৎ বিয়ে হয়না।
যাইহোক, আল্লাহর আদেশ না মানলে কোনোদিন শান্তি আসবেনা। তোওবা করে সংশোধন না করলে শাস্তি পেতে হবে, দুনিয়া অথবা আখেরাতে।
শাস্তির একটা অংশ হলো প্রেমিক কর্তৃক প্রতারণা...
অনেক প্রেমিক প্রতারণা করে ভুয়া কাবিননামা বানিয়ে নারীর সাথে কিছুদিন ঘর-সংসার (আসলে ধর্ষণ!) করে পরে সবকিছু অস্বীকার করে।
আবার অনেকে পরে যৌতুক দাবী করে কারণ তার টার্গেটই ছিলো মেয়ের ধনী বাপের টাকা।
এইভাবে কতযে নারী খুন পর্যন্ত হয়েছে!
হে আল্লাহ তুমি আমাদের ক্ষমা করো ও হেফাজত করো।
নারী ওয়ালী অর্থাৎ তার অভিভাবকের সম্মতি ছাড়া বিয়ে করতে পারবেনা।
আবূ মূসা আশ'আরী (রাঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, "ওয়ালী ছাড়া বিয়ে হয় না।" (আহমাদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, দারেমী, মিশকাত হা/৩১৩০, বাংলা মিশকাত হা/২৯৯৬ )
আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, "যদি কোন নারী তার ওয়ালীর(অভিভাবক) অনুমতি ছাড়া বিয়ে করে, তবে তার বিয়ে বাতিল, বাতিল, বাতিল।" (আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, ইবনু হিব্বান, হাকিম, মিশকাত হা/৩১৩১, বাংলা মিশকাত হা/২৯৯৭)
###
আবার কোনো নারীর পছন্দ ছাড়া তার গার্জিয়ান জোর করে কারো সাথে বিয়ে দিতে পারবেনা। বিশেষ করে, নারীর কোনো ছেলেকে বিয়ের ব্যপারে আপত্তি যদি শরীয়ত সম্মত কারণে করে থাকে, তাহলেতো ঐ বিয়েই বৈধ হবেনা। এমন হলে, ঐ নারীকে যদিওবা জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে বিয়ের পরে শরীয়াহ কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে ঐ বিয়ে বাতিল করে দিতে পারবেন।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ “পূর্বে বিয়ে হয়েছে এমন নারীর সাথে পরামর্শ করা ছাড়া তাকে বিয়ে দেওয়া যাবেনা। আর একজন কুমারী মেয়েকে তার সম্মতি আছে কিনা জিজ্ঞাস না করে তাকে বিয়ে দেওয়া যাবেনা। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলো, কুমারী মেয়েকে কিভাবে জিজ্ঞাসা করা হবে (কারণ, সেতো লজ্জায় হ্যা বা না কিছুই বলবেনা)।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ “কুমারী মেয়ের নীরব থাকাই হলো সম্মতি।”
সহীহ আল-বুখারী ৬৪৫৫।
কোনো গার্জিয়ান যদি কোনো নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দেয় তাহলে শরীয়াহ কোর্টের মাধ্যমে সেই বিয়ে বাতিল করে দিতে পারবেঃ
মা আয়িশাহ (রাঃ) এর কাছে একটি মেয়ে এসে বললো, সামাজিক মান-মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য আমার বাবা তার ভাইয়ের ছেলের সাথে (চাচাতো ভাইয়ের সাথে) আমার বিয়ের বিয়ে দেয় কিন্তু আমি এই বিয়ে করতে চাইনি (অর্থাৎ আমাকে কোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে)।
আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) না আসা পর্যন্ত তুমি এখানে বসে থাকো।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আসলে আয়িশাহ (রাঃ) তাঁকে মেয়েটির ব্যপারে বললেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) মেয়েটির বাবাকে ডেকে পাঠালেন এবং পরে মেয়েটিকে বললেন তুমি যেকোনো একটা বেছে নিতে পারো (হয় এই বিয়ে মেনে নিয়ে সংসার করতে পারো অথবা চাইলে এই বিয়ে ভেঙ্গে দিতে পারো)।
মেয়েটি বললোঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমার বাবা যা করেছে আমি সেটা মেনে নিয়েছি। কিন্তু আমি অন্য নারীদের কাছে এটা প্রমান করতে চাচ্ছিলাম (অর্থাত নারীদেরকে জোর করে বিয়ে দেওয়া যাবেনা)।
সুনানে আন-নাসায়ী ৩২১৭।
সুতরাং, নারীদের বিয়ের ক্ষেত্রে গার্জিয়ান এবং যাকে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে – উভয়ের সম্মতি লাগবে। একতরফা কোনো কিছু ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়।
Friday, January 17, 2014
Thursday, January 16, 2014
প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ানের এক নিবন্ধে বলা হয়েছে
প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ানের এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার সরকার ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতিতে জড়িত। নিবন্ধে বলা হয়, সরকারের সমালোচনা করায় আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যা গভীর উদ্বেগের। গতকাল গার্ডিয়ানে ‘বাংলাদেশ হ্যাজ লিটল টু সেলিব্রেট আফটার দ্য মোস্ট ভায়োলেন্ট ইলেকশন ডে ইন ইটস হিস্ট্রি (বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সহিংস নির্বাচনের দিন পার করার পর উল্লসিত হওয়ার কিছু নেই)’ শিরোনামে প্রকাশিত নিবন্ধে এসব মন্তব্য করা হয়। নিবন্ধে বলা হয়, ‘হাসিনা সরকার ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতিতে জড়িত এবং সরকার সমর্থক পত্রিকার এলিট ভাষ্যকাররা বিষয়টিকে ধামাচাপা দিচ্ছেন। তাছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবি করা শাহবাগ আন্দোলনের প্রতি সরকারের সমর্থন, বিরোধী রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা (জামায়াতে ইসলামী) এবং সরকারের সমালোচনাকারী সম্পাদককে গ্রেফতার (আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান) গভীর উদ্বেগের।’ নিবন্ধে বলা হয়, তলাবিহীন ঝুড়ি না হতে চাইলে বাংলাদেশের প্রয়োজন সত্যিকার গণতন্ত্র, প্রতিহিংসা বন্ধ করা এবং ঐক্যের ওপর জোর দেয়া এবং আরও বেশি করে বহু মতের সমাজ প্রতিষ্ঠায় কাজ করা। নিবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশের ইতিহাসে ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের দিনটি ছিল সবচেয়ে সহিংস। এদিন অন্তত ২১ জন লোক নিহত হয়। নির্বাচনের আগের রাতে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালানো হয়। তবে বর্তমান সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নতুন কিছু নয়। গত বছর মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের কার্যালয় তছনছ করা হয় এবং সংগঠনটি সম্পাদক আদুিলর রহমান খান ও পরিচালক নাসিরউদ্দিন এলানকে গ্রেফতার করা হয়। এমনকি সাভারের রানা প্লাজা ধসে নিহতদের স্বজনরা ক্ষতিপূরণ দাবিতে বিক্ষোভ করলে তাদের ওপর লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ করা হয়।
বিয়ের করণীয় বিষয়সমূহ : ১- বাসর ঘরে স্ত্রীর মাথার অগ্রভাগে ডান হাত রাখা এবং দু’আ পড়া : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন কোনো নারী, ভৃত্য বা বাহন থেকে উপকৃত হয় (বিয়ে বা খরিদ করে) তবে সে যেন তার মাথার অগ্রভাগ ধরে, বিসমিল্লাহ পড়ে এবং বলে : ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻰ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﺧَﻴْﺮَﻫَﺎ ﻭَﺧَﻴْﺮَ ﻣَﺎ ﺟُﺒِﻠَﺖْ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺷَﺮِّﻫَﺎ ﻭَﺷَﺮِّ ﻣَﺎ ﺟُﺒِﻠَﺖْ ﻋَﻠَﻴْﻪِ. (‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে এর ও এর স্বভাবের কল্যাণ প্রার্থনা করছি এবং এর ও এর স্বভাবের অকল্যাণ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।)’[3] ২- স্বামী-স্ত্রী উভয়ে একসঙ্গে দুই রাকা‘ত সালাত আদায় করা : আবদুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, স্ত্রী যখন স্বামীর কাছে যাবে, স্বামী তখন দাঁড়িয়ে যাবে। আর স্ত্রীও দাঁড়িয়ে যাবে তার পেছনে। অতপর তারা একসঙ্গে দুই রাকা‘ত সালাত আদায় করবে এবং বলবে : ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻟَﺑَﺎﺭِﻙْ ﻟِﻲ ﻓِﻲ ﺃَﻫْﻠِﻲ ، ﻭَﺑَﺎﺭِﻙْ ﻟَﻬُﻢْ ﻓِﻲَّ ، ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﺭْﺯُﻗْﻨِﻲ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﻭَﺍﺭْﺯُﻗْﻬُﻢْ ﻣِﻨِّﻲ، ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﺟْﻤَﻊَ ﺑَﻴْﻨَﻨَﺎ ﻣَﺎ ﺟَﻤَﻌْﺖَ ﺇِﻟَﻰ ﺧَﻴْﺮٍ، ﻭَﻓَﺮِّﻕْ ﺑَﻴْﻨَﻨَﺎ ﺇِﺫَﺍ ﻓَﺮَّﻗْﺖَ ﻰ ﺧَﻴْﺮٍ. ‘হে আল্লাহ, আপনি আমার জন্য আমার পরিবারে বরকত দিন আর আমার ভেতরেও বরকত দিন পরিবারের জন্য। আয় আল্লাহ, আপনি তাদের থেকে আমাকে রিযক দিন আর আমার থেকে তাদেরও রিযক দিন। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের যতদিন একত্রে রাখেন কল্যাণেই একত্র রাখুন আর আমাদের মাঝে যখন বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দেবেন তখন কল্যাণের পথেই বিচ্ছেদ ঘটাবেন।’[4] ৩- স্ত্রীর সঙ্গে সহবাসের দু‘আ পড়া। স্ত্রী সহবাসকালে নিচের দু’আ পড়া সুন্নত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি স্ত্রী সঙ্গমকালে বলে : ﺑِﺎﺳْﻢِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺟَﻨِّﺒْﻨَﺎ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥَ ﻭَﺟَﻨِّﺐِ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥَ ﻣَﺎ ﺭَﺯَﻗْﺘَﻨَﺎ (আল্লাহর নামে শুরু করছি, হে আল্লাহ, আমাদেরকে শয়তানের কাছ থেকে দূরে রাখুন আর আমাদের যা দান করেন তা থেকে দূরে রাখুন শয়তানকে।) তবে সে মিলনে কোনো সন্তান দান করা হলে শয়তান কখনো তার ক্ষতি করতে পারবে না।’[5] ৪- নিষিদ্ধ সময় ও জায়গা থেকে বিরত থাকা : আবূ হুরাইরা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন ‘যে ব্যক্তি কোনো ঋতুবতী মহিলার সঙ্গে কিংবা স্ত্রীর পেছনপথে সঙ্গম করে অথবা গণকের কাছে যায় এবং তার কথায় বিশ্বাস স্থাপন করে, সে যেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা অস্বীকার করলো।’[6] ৫- ঘুমানোর আগে অযূ বা গোসল করা : স্ত্রী সহবাসের পর সুন্নত হলো অযূ বা গোসল করে তবেই ঘুমানো। অবশ্য গোসল করাই উত্তম। আম্মার বিন ইয়াসার রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তিন ব্যক্তির কাছে ফেরেশতা আসে না : কাফের ব্যক্তির লাশ, জাফরান ব্যবহারকারী এবং অপবিত্র শরীরবিশিষ্ট ব্যক্তি, যতক্ষণ না সে অযূ করে।’[7] ৬- ঋতুবতীর স্ত্রীর সঙ্গে যা কিছুর অনুমতি রয়েছে : হ্যা, স্বামীর জন্য ঋতুবতী স্ত্রীর সঙ্গে যোনি ব্যবহার ছাড়া অন্য সব আচরণের অনুমতি রয়েছে। স্ত্রী পবিত্র হবার পর গোসল করলে তার সঙ্গে সবকিছুই বৈধ। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ﺍﺻْﻨَﻌُﻮﺍ ﻛُﻞَّ ﺷَﻲْﺀٍ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻨِّﻜَﺎﺡَ . ‘… সবই করতে পারবে কেবল সঙ্গম ছাড়া।’[8] ৭- বিয়ের নিয়ত শুদ্ধ করা : নারী-পুরুষের উভয়ের উচিত বিয়ের মাধ্যমে নিজকে হারামে লিপ্ত হওয়া থেকে বাঁচানোর নিয়ত করা। তাহলে উভয়ে এর দ্বারা ছাদাকার ছাওয়াব লাভ করবে। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমাদের সবার স্ত্রীর যোনিতেও রয়েছে ছাদাকা। সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেন ইয়া রাসূলুল্লাহ, আমাদের কেউ কি তার জৈবিক চাহিদা মেটাবে আর তার জন্য সে কি নেকী লাভ করবে? তিনি বললেন, ‘তোমরা কি মনে করো যদি সে ওই চাহিদা হারাম উপায়ে মেটাতো তাহলে তার জন্য কোনো গুনাহ হত না? (অবশ্যই হতো) অতএব তেমনি সে যখন তা হালাল উপায়ে মেটায়, তার জন্য নেকী লেখা হয়।’[9] ৮- স্ত্রী সান্বিধ্যের গোপন তথ্য প্রকাশ না করা : বিবাহিত ব্যক্তির আরেকটি কর্তব্য হলো স্ত্রী সংসর্গের গোপন তথ্য কারো কাছে প্রকাশ না করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,ْ ‘কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে ওই ব্যক্তি সবচে নিকৃষ্ট বলে গণ্য হবে যে তার স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হয় এবং স্ত্রী তার ঘনিষ্ঠ হয় অতপর সে এর গোপন বিষয় প্রচার করে।’[10] ৯- অলীমা করা : বিয়ের আরেকটি সুন্নত হলো অলীমা করা তথা মানুষকে দা‘ওয়াত করে খাওয়ানো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কাজে উদ্বুদ্ধ করেছেন। এমনকি তিনি আবদুর রহমান বিন আউফ রাদিআল্লাহু আনহু -এর উদ্দেশে বলেন, ﺃَﻭْﻟِﻢْ ﻭَﻟَﻮْ ﺑِﺸَﺎﺓٍ . ‘অলীমা কর, হোক না তা একটি ছাগল দিয়ে হয়।’[11] ১০- বিয়ের দা‘ওয়াত গ্রহণ করা : কেউ যদি বিয়ের দা‘ওয়াত দেয় তাহলে সে দা‘ওয়াত কবুল করা সুন্নত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমাদের কাউকে যখন বৌভাতের দাওয়াত দেয়া হয়, সে যেন তাতে অংশ নেয়।’[12] অপর এক হাদীসে তিনি বলেন, ‘আর যে দাওয়াত কবুল করল না সে যেন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্যাচরণ করল।’[13] ১১- নব দম্পতির জন্য দু‘আ করা : নব দম্পতির জন্য নিচের দু’আ করা সুন্নত। আবূ হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, যখন কোনো ব্যক্তি বিবাহ করত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, ‘আল্লাহ তোমার জন্য বরকত দিন, তোমার ওপর বরকত দিন এবং তোমাদের উভয়েক কল্যাণে মিলিত করুন।’[14] ১২- নির্দোষ সঙ্গীত ও দফ বাজানো : বিয়ের ঘোষণার স্বার্থে শুধু দফ বাজানো এবং নির্দোষ সঙ্গীত গাওয়ার অনুমতি রয়েছে। তবে সে সঙ্গীতে রূপের বর্ণনা কিংবা অবৈধ কিছুর আহ্বান না থাকতে হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘হালাল ও হারাম বিয়ের মধ্যে পার্থক্য কেবল ঘোষণা ও দফ বাজানো।’[15] রেফারেন্স:[3]. বাইহাকী, সুনান কুবরা : ১৪২১১; ইবন মাজা : ১৯১৮। [4]. তাবরানী, মু’জামুল কাবীর : ৮৯০০। [5]. বুখারী : ৭৩৯৬। [6]. মুসনাদ আহমদ : ১০১৭০; ইবন মাজা : ৬৩৯। [7]. সুনান আবূ দাউদ : ৪১৮২। [8]. মুসলিম : ৭২০। [9]. মুসলিম : ১৬৭৪; মুসনাদ আহমদ : ২১৫১১। [10]. মুসলিম : ৩৬১৫। [11]. বুখারী : ২০৪৯; মুসলিম : ৩৫৫৬। [12]. বুখারী : ৫১৭৩; মুসলিম : ৩৫৮২। [13]. মুসলিম : ৩৫৯৮। [14]. আবূ দাউদ, সুনান : ২১৩০। [15]. তিরমিযী : ১১১১; মুসনাদ আহমদ : ১৮৩০৫। — with Dawdul Islam
Wednesday, January 15, 2014
জামায়াত একটি গণতান্ত্রিক দল : খালেদা জিয়া
জামায়াত একটি গণতান্ত্রিক দল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের সাথে জোট ছাড়া হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
খালেদা জিয়া বলেন, জামায়াতসহ আমরা সবার সাথে সুসম্পর্ক চাই। দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কারো হস্তক্ষেপ চাইনা। জামায়াত একটি গণতান্ত্রিক দল। জামায়াতকে সাথে নিয়ে অতীতে আওয়ামী লীগই নির্বাচনে গিয়েছিলো আমরা যাইনি।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়কের জন্য আওয়ামী লীগই জামায়াতকে নিয়ে আন্দোলন করে।
নয়া দিগন্ত অনলাইন [15-01-2014]
জামায়াত একটি গণতান্ত্রিক দল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের সাথে জোট ছাড়া হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
খালেদা জিয়া বলেন, জামায়াতসহ আমরা সবার সাথে সুসম্পর্ক চাই। দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কারো হস্তক্ষেপ চাইনা। জামায়াত একটি গণতান্ত্রিক দল। জামায়াতকে সাথে নিয়ে অতীতে আওয়ামী লীগই নির্বাচনে গিয়েছিলো আমরা যাইনি।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়কের জন্য আওয়ামী লীগই জামায়াতকে নিয়ে আন্দোলন করে।
নয়া দিগন্ত অনলাইন [15-01-2014]
সাতক্ষীরা অপারেশনে ভারতীয় বাহিনীঃ ফাঁস হওয়া প্রমানাদি নিয়ে তোলপাড়
সাতক্ষীরায় যৌথবাহিনীর নামে ভারতীয় বাহিনী অপারেশনে অংশ নিয়েছিল, এমন কিছু প্রমান ফাঁস হওয়ার পর ইন্টারনেট জগতে চলছে তোলপাড়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইন্ডিয়ায় বাংলাদেশি দূতাবাস থেকে ফাঁস হওয়া গোপন বার্তায় বেরিয়ে এসেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অফিসের অনুরোধে সাতক্ষীরাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে রাজনৈতিক দমন-পীড়নে ও গণহত্যায় সক্রিয় ভাবে অংশ নিয়েছে ভারতের সেনাবাহিনী ও বিএসএফ।
চলমান রাজনৈতিক সংকটে ভারতীয় বাহিনীর সাহায্য চেয়ে বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে পাঠানো এই বার্তায় দেখা যায়, বাংলাদেশে রাজনৈতিক দমন-পীড়ন সক্রিয় ভাবে অংশ গ্রহণ করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৩৩তম কোরের ১৭তম, ২০তম ও ২৭তম মাউন্টেন ডিভিশান, এবং বিএসএফ।
ফাঁস হওয়া বার্তাগুলো দেখুন,
ফাঁসকৃত প্রথম বার্তার পৃষ্ঠা-১:
চলমান রাজনৈতিক সংকটে ভারতীয় বাহিনীর সাহায্য চেয়ে বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে পাঠানো এই বার্তায় দেখা যায়, বাংলাদেশে রাজনৈতিক দমন-পীড়ন সক্রিয় ভাবে অংশ গ্রহণ করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৩৩তম কোরের ১৭তম, ২০তম ও ২৭তম মাউন্টেন ডিভিশান, এবং বিএসএফ।
ফাঁস হওয়া বার্তাগুলো দেখুন,
ফাঁসকৃত প্রথম বার্তার পৃষ্ঠা-১:
ফাঁসকৃত প্রথম বার্তার পৃষ্ঠা-২:
ফাঁসকৃত দ্বিতীয় বার্তা:
দলিল গুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়,
২০১৩ নভেম্বরের ৭ তারিখে ইস্যু করা চিঠি পাঠিয়েছেন তৌফিক ইসলাম শাতিল। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র এসিষ্টেন্ট সেক্রেটারী। ইন্টারনেটে বেসিক সার্চ করে দেখা যায় তিনি ২০১২ অগাষ্টে জর্ডানে বাংলাদেশ দুতাবাসের হেড অফ কনসাল ছিলেন। জর্ডানে ২৫ জন বাংলাদেশী নারী শ্রমিক অপহরণ ধর্ষণ ও গুম হত্যা প্রসঙ্গে তিনি পত্রপত্রিকার সাথে কথা বলেছিলেন। এছাড়াও জর্ডানে বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত গোলাম মোহাম্মদ যখন বাংলাদেশী দুতাবাসে কর্মরত এক জর্ডানী মেয়েকে যৌন হয়রানি করে, তখন শাতিল ছিলেন ফার্ষ্ট সেক্রেটারি এবং তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজের বসের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
চিঠির আরেকজন হলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নুর মোহাম্মদ নুর ইসলাম। দিল্লীতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামরিক উপদেষ্টা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট অনুযায়ী তিনি ৬.৯.১১ তারিখে সামরিক বাহিনী থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত হন। ইন্ডিয়ায় তার অফিসের ফোন নাম্বার ও ইমেইল ঠিকানাও দেয়া আছে। ঐ অফিসে তার সহকারীর নাম ল্যাফটেনান্ট কর্ণেল ফখরুল আহসান।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নুর মোহাম্মদ নুর ইসলাম জানতে দিল্লীস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনে ক্লিক করুন, (স্ক্রুল করে পেজের নিচে দেখুন, Defence Wing)
ঢাকায় ভারতীয় পক্ষের যোগাযোগকারি ছিলেন সুজিত ঘোষ। তিনি ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের রাজনৈতিক সচিব। র এর বড় মাপের অপারেটিভ, অনেকে মনে করেন বাংলাদেশ ষ্টেশন চিফ।
সুজিতকে চিনতে ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন পেজে দেখুন,
(Counsellor, Political & Information, Sujit Ghosh)
চিঠির চরিত্রগুলোর মাঝে সবচাইতে বড় চরিত্র হলেন শহীদুল হক। একটা চিঠির প্রাপক। বাংলাদেশের ফরেন সেক্রেটারী। বায়োডাটা অনুযায়ী লন্ডন, ব্যাংকক, জেনেভায় কাজ করেছেন।
যোগাযোগের আরেকজন হলেন হাসান আবদুল্লাহ তৌহিদ। সবচেয়ে জুনিয়র এই ঘটনায়, এসিষ্টেন্ট সেক্রেটারী। এডমিন ক্যাডারে ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে জয়েন করেছিলৈা, পরে পররাষ্ট্রে আসে। সউদী আরবে ছিলো ছয়মাস। রেডিও আমার এর আরজে হিসেবেও কাজ করেছিলো। ঢাবি থেকে ২০১০ এ ফার্মেসিতে পাস করে।
Tuesday, January 14, 2014
সুইস ব্যাংকে জয়ের নামে ৩০বিলিয়ন ডলার ?
শেখ হাসিনা পুত্র সজীব জয়ের নামে সুইস ব্যাংকে ৩০ বিলিয়ন ডলার জমা হয়েছে বলে দাবী করেছেন এক সাংবাদিক। ঐ সাংবাদিক টুঁইটারে এবং সরাসরি ইমেইল করে সজীব জয়কে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছেন। এমনকি ঐ ইমেইলে জয়কে তার মা শেখ হাসিনা ওয়াজেদের রাষ্ট্রের জনগণের কাছ থেকে লুট করা এই অর্থ ফেরত দেয়ার দাবী জানিয়েছেন। উইলিয়াম গোমেজ নামের নির্বাসিত ঐ বাংলাদেশী সাংবাদিকের এই সংক্রান্ত একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি অনলাইন নিউজে সাংবাদিক জেসিকা ফক্স একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। তিনি মিডিয়াগুলোকে সতর্ক করে এও বলেছেন যে জয় এই অর্থের বিষয়টিতে নীরব থাকবে। কিছুতেই মুখ খুলবে না। PLACE YOUR AD HERE PLACE YOUR AD HERE ইমেইলে উইলিয়াম জয়কে লিখেছেন, আপনি নীরব থাকবেন কারন আপনি চোর না হয় ডাকাত, যেমন মা তেমনি পুত্র আপনি। আপনার মাও হল যেমন বাপ তেমন কন্যা। জয়কে তিনি উপদেশ দিয়ে লিখেছেন, আপনি নিজেকে বাংলাদেশের যুবরাজ ঘোষণা দিন এবং বাংলাদেশকে ‘বানানা রিপাবলিক’ বা ‘মামা রিপাবলিক’ নামকরন করুন। বাংলাদেশের সকল সমস্যার জন্য জয় ও তার পরিবারকে দায়ী উল্লেখ করে বলেন, হেফাজতের নিরীহ প্রতিবাদকারীদের হত্যার জন্য নেপথ্যে দায়ী শেখ হাসিনাক। উইলিয়ামের দাবী এবিষয়টি বাংলাদেশী মিডিয়াগুলোকে জানানো হলেও তারা নীরব রয়েছে। তার মতে বাংলাদেশের অধিকাংশ মিডিয়া শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের জনসংযোগ (পিআর) এর কাজ করে থাকে।
আটকে দেওয়া হলো গাড়ি, হেঁটেই গেলেন দিপু মণি
সাভারের স্মৃতিসৌধে যাবার পথে আটকে দেওয়া হলো সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দিপু মনির গাড়ি। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাদানুবাদের পর শেষ পর্যন্ত মাথা নিচুকরে পায়ে হেঁটেই সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ভেতরে গেলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের সঙ্গে গাড়ি নিয়ে স্মৃতিসৌধে ঢুকতে না পেরে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন দিপু মনি।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৭ মিনিটে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের সঙ্গে গাড়ি নিয়ে স্মৃতিসৌধ এলাকায় পৌঁছান দীপু মনি। এর কিছুক্ষণ আগেই প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিসৌধে আসেন। তবে মন্ত্রীরা নিরাপত্তাবেষ্টনী অতিক্রম করতে পারলেও প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা কর্মকর্তারা আটকে দেন তার গাড়ি।
প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের সঙ্গে গাড়ি নিয়ে স্মৃতিসৌধে ঢুকতে না পেরে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন দিপু মনি।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৭ মিনিটে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের সঙ্গে গাড়ি নিয়ে স্মৃতিসৌধ এলাকায় পৌঁছান দীপু মনি। এর কিছুক্ষণ আগেই প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিসৌধে আসেন। তবে মন্ত্রীরা নিরাপত্তাবেষ্টনী অতিক্রম করতে পারলেও প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা কর্মকর্তারা আটকে দেন তার গাড়ি।
এসময় তিনি গাড়ি নিয়েই ভেতরে প্রবেশ করতে অনড় থাকেন। গাড়ি থেকে না নেমে বেশ কিছুক্ষণ ফোন করেন কয়েকজনকে। এ সময় নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে দীপু মনির উত্তপ্ত কথা-কাটাকাটিও হয়। শেষে প্রধান ফটকে গাড়ি রেখে হেঁটেই স্মৃতিসৌধের ভেতরে প্রবেশ করেন সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
Monday, January 13, 2014
রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত ১৩ শ’; প্রতিদিন গড়ে খুন হয়েছে ১২ জন হাসিনার সরকারের ৫ বছরে ২২ হাজার মানুষ খুন
১৩ জানুয়ারি ২০১৪, সোমবার, ১০:২৬মহাজোট সরকারের পাঁচ বছরে সারা দেশে ২২ হাজার মানুষ খুন হয়েছেন। সে হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ১২ জন খুন হয়েছেন। এর মধ্যে সরকারের শেষ বছর ২০১৩ সালে খুনের ঘটনা ঘটেছে সবচেয়ে বেশি। এ বছর খুন হন চার হাজার ৪২৮ জন। গত বছর এবং চলতি বছরের শুরুতে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। গত ২৫ নভেম্বর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে গতকাল পর্যন্ত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে প্রায় ১৫০।
এত খুনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন সংশ্লিষ্টরা।
পুলিশ সদর দফতর এবং বিভিন্ন মানবাধিকার ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সূত্র অনুযায়ী, সরকারের শেষ বছর ২০১৩ সালে দেশে খুনের ঘটনা ঘটে চার হাজার ৪২৮টি। ২০১২ সালে চার হাজার ৪১২ জন খুন হয়েছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০০৯ সালে সারা দেশে খুন হয়েছেন চার হাজার ২১৯ জন। ২০১০ সালে তিন হাজার ৯৮৮ জন খুন হয়েছেন এবং ২০১১ সালে খুন হয়েছেন তিন হাজার ৯৭০ জন। সব মিলিয়ে গত পাঁচ বছরে ২২ হাজার মানুষ খুন হয়েছেন। এ সময় অন্তত ২০ জন সাংবাদিককে খুন করা হয়েছে। পুলিশ ও বিজিবি সদস্যসহ বেশ কিছু হত্যাকাণ্ড ঘটেছে এই সময়ে। সূত্র জানায়, বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা ঘটেছে গত পাঁচ বছরে। বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) সদর দফতর পিলখানায় বিদ্রোহের নামে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে ৫৭ সেনাকর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে। সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড, যুবলীগনেতা ইব্রাহীম, পল্টনে সাংবাদিক ফরহাদ খাঁ দম্পতি, গুলশানে স্বামী-স্ত্রী, নরসিংদীর মেয়র লোকমান হোসেন, পুরান ঢাকায় পুলিশ কর্মকর্তা গৌতম, যুবলীগনেতা মিল্কী, রামপুরায় ফটো সাংবাদিক আফতাব আহমেদ, পুলিশের সাবেক এডিশনাল এসপি ফজলুর রহমান, চামেলীবাগে পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান এবং তার স্ত্রী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জুবায়ের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু বকর, পুরান ঢাকায় ছাত্রলীগের হাতে বিশ্বজিৎ, নারায়ণগঞ্জে ত্বকি, ব্লগার রাজিব হত্যাকাণ্ডসহ বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা ঘটেছে। সন্তানের হাতে বাবা-মা খুন, বাবা বা মায়ের হাতে সন্তান, স্বামীর হাতে স্ত্রী, স্ত্রীর হাতে স্বামী, ভাইয়ের হাতে ভাই, বন্ধুর হাতে বন্ধুখুনসহ নানাভাবে এসব খুনের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ রাজধানীর গোপীবাগ এলাকায় এক বাড়িতে ছয় খুনের ঘটনা বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর প্রতিটি ঘটনায়ই মামলা হয়। কিন্তু চাঞ্চল্যকর বেশির ভাগ মামলার কোনো কূলকিনারা হচ্ছে না।
বেশ কিছু খুন হয়েছে রাজনৈতিক সহিংসতায়। গত পাঁচ বছরে রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রায় ১৩ শ’ মানুষ নিহত হয়েছেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৯ সালে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ২৫১ জন, ২০১০ সালে ২২০, ২০১১ সালে ১৩৫, ২০১২ সালে ১৮৪ জন এবং ২০১৩ সালে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছেন চার শতাধিক মানুষ।
গত পাঁচ বছরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন প্রায় ৭০০ মানুষ। তার মধ্যে গত বছরেই ঘটেছে সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ড। চলতি বছরের শুরুতেও বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০০৯ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মৃত্যু হয়েছে ১৫৪ জনের, ২০১০ সালে ১২৭, ২০১১ সালে ৮৪, ২০১২ সালে ৯৪ এবং ২০১৩ সালে তিন শতাধিক মানুষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে নিহত হন। এর মধ্যে রাজনৈতিক নেতাকর্মী, ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষসহ অনেক শ্রেণী-পেশার মানুষ রয়েছেন।
গত পাঁচ বছরে সাত শতাধিক মানুষ গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন। মর্মান্তিক এসব হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন অনেক নিরপরাধ মানুষও। সাভারের আমিনবাজারে ছয় শিার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যুর কথা স্মরণ করে এখনো আঁতকে ওঠেন অনেকে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৯ সালে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন ১২৭, ২০১০ সালে ১৭৪, ২০১১ সালে ১৬১, ২০১২ সালে ১২৬ এবং ২০১৩ সালে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন ১২৮ জন।
Subscribe to:
Posts (Atom)